বাঘ বসবাসের জন্য কতটা উপযুক্ত বক্সা। — ফাইল চিত্র।
বক্সার বনাঞ্চলকে বাঘ বসবাসের জন্য কতটা উপযুক্ত করে তোলা গিয়েছে বা অন্য রাজ্য থেকে বক্সায় বাঘ আনা হলে, উত্তরের এই জঙ্গল তাদের বসবাসের জন্য কতটা প্রস্তুত— এ ধরনের নানা উত্তরের খোঁজে আগামী মাসে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পে আসার কথা বাঘ নিয়ে নীতি-নির্ধারক কমিটির প্রতিনিধিদের। বন দফতর সূত্রে খবর, যে প্রতিনিধি দলে ‘ন্যাশনাল টাইগার কনজ়ারভেশন অথরিটি’ বা ‘এনটিসিএ’ ও ‘গ্লোবাল টাইগার ফোরাম’-এর শীর্ষ কর্তাদের থাকার কথা। যা নিয়ে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পে প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
বছর দুয়েক আগে, ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে ট্র্যাপ ক্যামেরায় একটি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের ছবি ধরা পড়ে। তখন বনকর্তারা জানিয়েছিলেন, তার আগে, শেষ বার ১৯৯৮ সালে বক্সার জঙ্গলে সরকারি এমন বাঘের ছবি পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু মাঝের এই দীর্ঘ সময়ে অনেক বার বক্সার জঙ্গলে বাঘ থাকার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ প্রমাণ তাঁদের হাতে এসেছে বলেও বার বার দাবি করেছেন বনকর্তারা। সূত্রের খবর, ‘এনটিসিএ’-র ২০১৪ সালের বাঘ গণনা রিপোর্টে বক্সায় তিনটি বাঘ থাকার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু ২০১৮ সালের সেই ‘এনটিসিএ’-র রিপোর্টেই বক্সায় বাঘের সংখ্যা শূন্য বলা হয়। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরে ‘এনটিসিএ’-র রিপোর্ট এখনও হাতে পৌঁছয়নি। কিন্তু এ বারের রিপোর্ট তাঁদের হতাশ করবে না বলেও বনকর্তাদের অনেকেই আশাবাদী।
এরই মধ্যে গত কয়েক বছর ধরে বক্সার জঙ্গলে বাইরে থেকে বাঘ আনার কথা চলছে। মাঝে আর একটি রাজ্যের কথা একবার উঠলেও, মূলত অসম থেকেই এই বাঘ আনার পরিকল্পনা হয়েছে বলে বন দফতর সূত্রের খবর। যার জেরে বহুদিন ধরেই বক্সাকে বাঘের বসবাসের উপযোগী করে গড়ে তোলার চেষ্টা চালাচ্ছেন বনকর্তারা। অন্য বনাঞ্চল থেকে থেকে কয়েকশো হরিণ ইতিমধ্যেই উত্তরের এই জঙ্গলে ছাড়া হয়েছে। এই জঙ্গলের গা ঘেঁষে থাকা বিভিন্ন ‘ফরেস্ট ভিলেজ’-ও সরানো নিয়ে আলোচনা চলছে। যদিও তা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি।
এরই মধ্যে এ বার বক্সার জঙ্গল বাঘেদের বসবাসের জন্য কতটা প্রস্তুত, দেখতে আসতে চলেছেন নীতি-নির্ধাকর কমিটির প্রতিনিধিরা। রাজ্যের মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) দেবল রায় বলেন, “ওই নীতি-নির্ধারক দল বক্সায় কবে আসবে, এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। মে মাসে দলটি আসতে পারে। দলে এনটিসিএ ও গ্লোবাল টাইগার ফোরামের প্রতিনিধিদের থাকার কথা।” যদিও বন দফতরের বক্সার আধিকারিকেরা এ নিয়ে কিছু জানাতে চাননি। তবে সূত্রে খবর, ওই দলের আসা নিয়ে ইতিমধ্যেই তাদের মধ্যেও চূড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে।