নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে। তিস্তায়। —নিজস্ব চিত্র।
একে পাহাড়-সমতলে বৃষ্টি, তার উপরে তিস্তা ব্যারাজের গেট খুলে প্রতি মিনিটে বিপুল জল ছাড়া হচ্ছে। দুইয়ের প্রভাবে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা জলপাইগুড়ি শহর এবং লাগোয়া এলাকায়। বৃহস্পতিবার বিকেলের পর থেকে জলপাইগুড়ি শহরে করলা নদীর জল ঢুকতে শুরু করেছে। দোমহনি থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত তিস্তার সংরক্ষিত এলাকায় হলুদ এবং অসংরক্ষিত এলাকায় লাল সতর্কতা জারি রয়েছে। জলঢাকা নদীর সংরক্ষিত এবং অসংরক্ষিত দুই এলাকাতেই লাল সর্তকতা রয়েছে।
সেচ দফতর জানিয়েছে, তিস্তা জলঢাকা-সহ সব নদীতেই জল বাড়ছে। হাতিনালা উপচে পড়ে বানারহাটে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। নাগরাকাটায় ডায়না নদীর বাঁধ ভেঙে জল ঢুকেছে গ্রামে। জেলা প্রশাসনের তরফে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হয়েছে। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেন, “বন্যা দুর্গতদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। শুকনো খাবার দেওয়া হচ্ছে, রান্না করা খাবারেরও বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। উদ্ধারের জন্য সব রকম ব্যবস্থা হয়েছে।”
ভুটান থেকে সিকিম সর্বত্রই টানা বৃষ্টি চলছে, উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি এলাকাতেও বৃষ্টি হচ্ছে। পাহাড়ি এলাকা থেকে জল গড়িয়ে সমতলে নামছে। পাহাড় থেকে নেমে আসা জলের চাপ নিতে পারছে না গজলডোবার তিস্তা ব্যারাজ। ব্যারাজ বাঁচাতে গেট কিছুটা খুলতে হয়েছে। সেচ দফতরের এক কর্তার কথায়, “জল ছাড়তে বাধ্য হচ্ছি।” এ দিন বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টেয় ব্যারাজ থেকে জল ছাড়ার হার হয় সর্বোচ্চ। প্রায় ৪,২২৪ কিউমেক (প্রতি সেকেন্ডে নদীর এক ঘনমিটার অংশ দিয়ে কতটা জল প্রবাহিত হয় তার একক)। ওই সময়টা ছাড়া প্রতি ঘণ্টায় গড়ে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কিউমেক জল ছাড়া হচ্ছে ব্যারাজ থেকে।
গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে বানারহাটে। প্রায় ২৯০ মিলিমিটার। মালবাজারে ১১৩ মিলিমিটার এবং হাসিমারায় ১৪০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, আগামী তিন দিন ভারী বৃষ্টি হতেপারে। (তথ্য সহায়তা: বিল্টু সূত্রধর)