হাসপাতালে চলছে চিকিৎসা।
ট্রাকের সঙ্গে গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হল যুব তৃণমূলের এক নেতা সহ ৫ দলীয় সমর্থকের। রবিবার রাতে জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া তিস্তা সেতু এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, জলপাইগুড়িগামী একটি এসইউভি গাড়ির সঙ্গে উল্টো দিক থেকে আসা একটি পণ্যবাহী ট্রাকের মুখোমুখি ধাক্কা লাগে। গাড়িটি দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছে। গাড়িতে চালক সহ ৮ জন ছিলেন। দুর্ঘটনার পরে তাঁদের সকলকে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, জখম ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতেরা সকলেই হলদিবাড়ির বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। সকলেই যুব তৃণমূলের সমর্থক। এ দিন সকালে দলীয় একটি সভায় যোগ দিতে গাড়ি ভাড়া করে তাঁরা কোচবিহারে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
পুলিশ ও তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে মৃতদের মধ্যে মজিবুল হক (৩২) গাড়ির চালক। স্বদেশ রায় (৩৮) যুব তৃণমূলের হলদিবা়ড়ির নেতা। এ ছাড়া রয়েছেন সুশান্ত নন্দী (৩৪), পবিত্র রায় (৩৩), ভূদেব রায় (৩২)। দুর্ঘটনায় আরও চার জন জখম হয়েছেন। তাঁদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। মৃত ও জখমরা প্রত্যেকেই হলদিবাড়ি এলাকার বাসিন্দা। জলপাইগুড়ি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধা বলেন, ‘‘সব মিলিয়ে ৯ জনকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ৫ জনকে হাসপাতাল থেকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়েছে। বাকিদের চিকিৎসা চলছে।’’
রাস্তায় সার দিয়ে দাঁড়িয়ে প়ড়েছে গাড়ি।
জখমদের মধ্যে রয়েছে বিষ্ণু রায়, অভিজৎ কর, ঝন্টু সরকার। জখম অভিজিৎ বলেন, ‘‘যুব তৃণমূলের একটি কাজে কোচবিহারে গিয়েছিলাম।’’ কিছু ক্ষণ কথা বলার পরেই অভিজিৎ সংজ্ঞা হারান। তাঁর মাথায় চোট লেগেছে।
কী ভাবে ঘটল দুর্ঘটনাটি?
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার থেকে ফেরার পথে বালাপাড়ার কাছে জিপের সামনে পরে যায় একটি বাইক। ওই বাইকটি বাঁচাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে বড় ট্রাক। মুখোমুখি সংঘর্ষে গাড়িটি দুমড়ে মুচড়ে রাস্তার পাশে গড়িয়ে পরে। ঘটনার পরে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বালাপাড়ার দু’পাশে জাতীয় সড়কে শতাধিক দূর পাল্লার বাস ও ট্রাক দাঁড়িয়ে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, ট্রাকের চালক পলাতক। জলপাইগুড়ির জেলা পুলিশ সুপার আকাশ মেঘারিয়া বলেন, ‘‘ট্রাকের চালকের খোঁজ মেলেনি। ঘটনাটি কী ভাবে ঘটল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটি।
এ দিকে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে জখমদের সাহায্যের জন্য জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূলের নেতা কর্মী ছাড়াও বাম-কর্মীরাও হাসপাতালে চলে আসেন। প্রয়োজনীয় রক্তের ব্যবস্থা করা হয়। জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “মর্মান্তিক ঘটনা। এর বেশি এখন কিছু বলার নেই।” জেলা যুব তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মৃতদের শনাক্ত করতে হলদিবাড়ি নেতৃত্বের সঙ্গে কথা হয়েছে। ঘটনার কথা সংগঠনের সর্ব ভারতীয় নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানানো হয়েছে।’’
ছবি: সন্দীপ পাল।