দুই বিয়ে করে কোণঠাসা বর। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
হঠাৎ দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ। দরজা খুললেন নববিবাহিতা। দেখলেন, বাড়ির দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন স্বামীর প্রথম পক্ষের স্ত্রী। মুহূর্তের মধ্যে পরিস্থিতি উত্তপ্ত। দুই স্ত্রীর টানাপড়েনে বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন স্বামী। অবস্থা এমন জায়গায় গিয়ে দাঁড়ায় যে, প্রথম পক্ষের স্ত্রী স্বামীকে মারতে উদ্যত হন।
এ দিকে স্বামীর গায়ে কিছুতেই হাত দিতে দেবেন না দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী। তিনি চেষ্টা করছেন স্বামীকে বাঁচানোর। বৃহস্পতিবার রাতে এমনই নাটকীয় ঘটনা ঘটে পুরাতন মালদহ পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের খয়েরাতিপাড়া এলাকায়। যদিও পাড়া-প্রতিবেশী নীরব দর্শকের ভূমিকায় ছিলেন। কেউই চাননি পারিবারিক বিবাদের মধ্যস্থতা করতে গিয়ে ঝামেলায় পড়তে। আবার চোখ ফিরিয়ে চলে যেতেও পারছিলেন না। স্বামীকে ঘিরে দুই স্ত্রীর বাদানুবাদ এবং হাতাহাতির খবর যায় পুরাতন মালদহ থানার পুলিশের কাছে। এর পর দীর্ঘ আলোচনা চলে। পুলিশের হস্তক্ষেপে নিয়ন্ত্রণে আসে পরিস্থিতি। প্রথম পক্ষের স্ত্রীকে ওই এলাকা থেকে সরিয়ে নিয়ে যায় পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, খয়েরাতিপাড়া এলাকার বাসিন্দা ইব্রাহিম শেখ বিহারের কাটিহারে একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। চার বছর আগে বিয়ে করেছিলেন টিনা বিবিকে। তবে দাম্পত্য কলহ হত প্রায় প্রতিদিন। এই বিবাদের জেরে তাঁরা আলাদা থাকতে শুরু করেন। তবে আইনত বিবাহবিচ্ছেদ হয়নি। এরই মধ্যে ইব্রাহিম কাটিহারের বাসিন্দা সাহেদা খাতুনকে বিয়ে করেন। বৃহস্পতিবার রাতে নতুন বউকে নিয়ে মালদহের খয়েরাতিপাড়া এলাকায় নিজের বাড়িতে আসেন। তার পরেই শুরু হয় ঝামেলা।
খয়েরাতিপাড়া এলাকাতেই বাপের বাড়িতে থাকেন ইব্রাহিমের প্রথম পক্ষের স্ত্রী টিনা। স্বামী নতুন বিয়ে করেছেন শুনেই সোজা তাঁর বাড়িতে চলে যান। প্রথমে বাড়ির সামনে ধর্নায় বসে পড়েন। তার পর বাড়িতে ঢুকতে চান তিনি। টিনার দাবি, আইনত তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়নি। তাই এখনও তিনি ইব্রাহিমের স্ত্রী। সেই সুবাদে স্বামীর বাড়িতে তিনি ঢুকতেই পারেন। কিন্তু দ্বিতীয় বৌ কিছুতেই ঢুকতে দেবেন না সতীনকে। রাতদুপুরে স্বামী এবং দুই স্ত্রীর ঝামেলায় ওই বাড়ির সামনে ভিড় জমতে শুরু করে।