সার বেঁধে: ছিপড়া গ্রামের রায়ডাক নদীর পাড়ে বুনো হাতির দল। বুধবার সকাল। নিজস্ব চিত্র
বৃষ্টিতে ভিজে, রাত জেগে গ্রাম পাহারা দিয়েও রোখা যাচ্ছে না বুনো হাতির হানা। মশাল, সার্চ লাইট বা পটকার আওয়াজকেও তোয়াক্কা করছে না তারা। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ছিপড়া, পানবাড়ি বনাঞ্চল থেকে খাবারের খোঁজে প্রতি রাতে বুনো হাতির দল ঢুকে পড়ছে বসতি এলাকায়। তাতেই আতঙ্কে ছিপড়া, পানবাড়ি, ছোট চৌকিরবস এলাকার বাসিন্দারা।জমির ফসল, সুপারি বাগান, কলা বাগানের ব্যাপক ক্ষতি করেও ক্ষান্ত থাকছে না হাতির দল। ঘর-বাড়ি ভেঙে মজুত রাখা চাল, আটা, ধান, লবণ খেয়ে নিচ্ছে তারা। হাতির হানা ঠেকাতে পানবাড়ি ও ছিপড়া গ্রামের চারধারে বিদ্যুতের তারের বেড়ার দাবি তুলেছেন বাসিন্দারা।গত সোমবার এই দাবিতেই সাউথ রায়ডাক রেঞ্জ অফিসে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা।
ছিপড়া গ্রামের বাসিন্দা সুমন্ত নার্জিনারী জানান, ধান গাছের লোভে প্রতি রাতে বুনো হাতির হানা দিচ্ছিল গ্রামে। গত এক সপ্তাহে প্রায় ৭ বিঘা জমির ধান গাছ, তিন বিঘা কলা বাগান খেয়ে সাফ করেছে। সুপারি বাগানও তছতছ করেছে। ১০টি বাড়ি ভেঙেছে। হল্লা, পটকা এবং মশালকেও আর ওরা তোয়াক্কা করছে না।
অন্য দিকে, বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের বনাঞ্চল লাগোয়া পানবাড়ি গ্রামে প্রতি রাতে বুনো হাতি হানা দিচ্ছে। তুরতুরি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য বিশ্বজিৎ কেরকাট্টা জানান, মিড-ডে মিলের চালের খোঁজে
গত সোমবার রাতে পানবাড়ি মিশন প্রাইমারি স্কুলে ব্যাপক তাণ্ডব চালায় দুই বুনো হাতি। ওই স্কুলের রান্নাঘর এবং একটি শ্রেণিকক্ষের সবগুলি জানলা দরজা ভেঙে ফেলে। ঘরের ইটের দেয়ালের কিছুটা অংশও ভেঙে ফেলে। এ ছাড়া, সুখের মিনজ নামে এক বাসিন্দার বাড়ি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। ঘরে কোনও খাবার না পেয়ে রান্নার বাসন পিষে ভেঙে ফেলে। একটি আইসিডিএস কেন্দ্রে দেওয়াল ভেঙে ঘরে মজুত চাল খেয়ে ফেলে বলেও অভিযোগ।
রেঞ্জ অফিসার শুভায়ু সাহা জানান, বুনো হাতির হানা রোধে গ্রামের চারপাশে বিদ্যুতের তারের বেড়া, সার্চ লাইট এবং পটকার দাবি জানিয়েছেন বাসিন্দারা। তাঁদের হাতে সেগুলি দিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাতটহল বাড়ানো হয়েছে। বিদ্যুতের বেড়া দেওয়ার দাবি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।