বাজারে আনাজ ফেলে গিয়েছে চাষিরা। নিজস্ব চিত্র
একে আনাজের দাম নেই। তার উপরে, বিক্রি না হওয়া আনাজ রাখার মতো ব্যবস্থাও নেই। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ কৃষকেরা গত এক সপ্তাহে পর-পর দু’দিন বস্তা-বস্তা আনাজ ফেলে দেন কোচবিহারের দিনহাটা মহকুমার ভেটাগুড়ির পাইকারি বাজারে। কয়েক দিন আগেই দাম না পেয়ে এই বাজারে টম্যাটো এবং ঢেঁড়স ফেলে দিয়ে যান কৃষকেরা। গত কালও একই ঘটনা ঘটে এই বাজারে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কৃষি দফতরের দিনহাটার এক আধিকারিকের মতে, উৎপাদিত আনাজ বাইরের বিভিন্ন বাজারে নিয়ে যাওয়ার জন্য যথাযথ বিপণন পরিকাঠামো না থাকায়, কোনও কোনও ক্ষেত্রে এই সমস্যা হচ্ছে। কৃষি দফতর সূত্রে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, ভেটাগুড়ি বাজারে আনাজ ফেলে যাওয়ার খবর নেই।
সূত্রের খবর, দিনহাটার ভেটাগুড়িতে একটি ছোট বহুমুখী হিমঘর (যেখানে আনাজ, ফল সবই রাখা হয়) থাকলেও, সেখানে সে ভাবে আনাজ রাখার সুবিধা নেই। পাশাপাশি, দিনহাটার কৃষি মেলায় সরকারি উদ্যোগে যে হিমঘর তৈরি করা হয়েছিল, সেটি এখনও চালু হয়নি। বিনোদ বর্মণ, বেলাল হোসেনের মতো কৃষকদের ক্ষোভ, ‘‘গ্রামে-গঞ্জে কোনও কাজ নেই। একশো দিনের কাজও বন্ধ। বেশি দাম দিয়ে সার, বীজ কিনে আনাজ চাষ করলেও, বাজারে তার দাম নেই। এমনকি, ভ্যান ভাড়াও উঠছে না।’’ তাঁদের অভিযোগ, আনাজ সংরক্ষণের কোনও ব্যবস্থা দিনহাটায় নেই। হিমঘরে আনাজ সংরক্ষণ করা গেলে, দাম বাড়লে তা বিক্রি করা যেত। অবিলম্বে দিনহাটার কৃষিমেলার হিমঘরটি চালুর দাবি তুলেছেন তাঁরা।
এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের কৃষক সংগঠন কিসান খেতমজুর সংগঠনের দিনহাটা ১-এর ব্লক সভাপতি নবি করিম মিয়া বলেছেন, ‘‘কৃষক ও আনাজ চাষিদের কথা মাথায় রেখে, দিনহাটায় একাধিক বহুমুখী হিমঘর গড়ে তোলার জন্য কৃষি বিপণন দফতরের মন্ত্রীর কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। রাজ্য সরকারও বহুমুখী হিমঘর গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে। সে হিমঘর গড়ে উঠলে, আশা করি, সমস্যা মিটে যাবে।
মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক রানা গোস্বামীর মতে, জেলায় ‘পিপিপি’ মডেলে যদি বহুমুখী হিমঘর হয়, তা হলে কৃষক ও ব্যবসায়ী—দু’পক্ষই লাভবান হবেন।