—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
আলুর বন্ডের ‘টোকেন’ নিতে শুক্রবার ভোর থেকে আলিপুরদুয়ারের বিভিন্ন হিমঘরের বাইরে ভিড় জমল কৃষকদের। দীর্ঘ ছ-সাত ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে এ দিন ‘টোকেন’ পান অনেকে। এ দিকে, লাইনে শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য লাঠি হাতে হাজির ছিল পুলিশও। জেলার বেশ কিছু হিমঘর আবার বন্ডে বস্তা প্রতি অগ্রিম ২০ টাকা জমা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে। এ দিন কুড়ি টাকা অগ্রিম না নেওয়ার দাবিতে কৃষক সভার তরফে আলিপুরদুয়ার ২ ব্লকের উত্তর পারোকাটায় একটি হিমঘরে লাগানো হয় পোস্টার। যদিও জেলা কৃষি দফতরের আধিকারিকদের দাবি, প্রকৃত কৃষকেরা যাতে আলুর বন্ড পেতে কোনও ভাবেই সমস্যার মুখে না পড়েন, তা নিয়ে নজরদারি চালানো হবে।
কৃষি দফতর সূত্রে খবর, আলিপুরদুয়ার জেলায় এ বছর প্রায় কুড়ি হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। আলুর ফলন ভাল হওয়ায় আশা করা হচ্ছে, প্রায় পাঁচ লক্ষ ৯৪ হাজার ৫৩৩ মেট্রিক টন আলুর ফলন হবে এ বছর। এ দিকে জেলায় তিনটি ব্লকে মোট ১২টি হিমঘর রয়েছে। প্রতিটি হিমঘরের ক্ষেত্রেই ক্ষুদ্র এবং মাঝারি কৃষকদের জন্য ২০% সংরক্ষণ রাখা হয়েছে। তবে তার জন্য কৃষকদের ‘কৃষকবন্ধু’ কার্ড থাকতে হবে। যদি না থাকে, জমির কাগজ দিয়ে উপযুক্ত প্রমাণ দিতে পারলে প্রাথমিক ভাবে ২৫ থেকে ৫০ প্যাকেট পর্যন্ত আলুর বন্ড সংগ্রহ করতে পারবেন কৃষকেরা। বৃহস্পতিবারই প্রত্যেকটি ব্লকের বিডিও এবং কৃষি আধিকারিকদের পাশাপাশি, হিমঘর কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে বৈঠক হয়েছে। সেখানে প্রশাসনের তরফে কৃষকদের স্বার্থে একাধিক বিষয়ে হিমঘর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। শুক্রবার জেলার একাধিক হিমঘর থেকে আলুর বন্ডের ‘টোকেন’ দেওয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট তারিখ দিয়ে বন্ড সংগ্রহ করার নির্দেশিকাও জারি করা হয়েছে হিমঘরগুলির তরফে।
সিপিএমের আলিপুরদুয়ার জেলার সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বলাই সরকারের দাবি, ‘‘প্রতি বছরই প্রকৃত কৃষকদের হিমঘরে আলুর বন্ড পেতে হয়রানির মুখে পড়তে দেখি। কৃষকদের স্বার্থে প্রশাসন ব্যবস্থা নিক।’’ আলিপুরদুয়ার জেলার উপ-কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) গোপাল বর্মা বলেন, ‘‘আলুর বন্ড পেতে প্রকৃত কৃষকদের যাতে কোনও ভাবে অসুবিধার মুখে পড়তে না হয়, সে দিকে আমাদের নজর থাকবে। জেলা কৃষি দফতর কৃষকদের
পাশে রয়েছে।’’