অংশু মজুমদার। ফাইল ছবি।
ভুটানে নির্মীয়মাণ সেতু ভেঙে মৃত্যুর ৫০ ঘণ্টা পর শিলিগুড়ির যুবক বাস্তুকারের দেহ তাঁর বাড়িতে এসে পৌঁছল। বৃহস্পতিবার রাতে জয়গাঁর ভুটান সীমান্ত গেট হয়ে তাঁর দেহ নিয়ে পরিজনেরা শহরে ফেরেন। সরকারি সূত্রের খবর, গত মঙ্গলবার ভুটানের ওয়াং চু নদীর উপর ২০৪ মিটারের নির্মীয়মাণ সেতু ভেঙে তিনজনের মৃত্যু হয়। তাঁদের মধ্যে ছিলেন শিলিগুড়ির ২২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা অংশু মজুমদার (৩১)। নিখোঁজ হয়ে যান ছ’জন। অংশু সহকারি বাস্তুকার হিসেবে ওই সেতু নির্মাণ প্রকল্পে কাজ করছিলেন। করোনায় বেশ কিছুদিন বাড়িতে থেকে অক্টোবরে তিনি ভুটানে ফের গিয়েছিলেন।
ঘটনার দিন বিকেল থেকে তাঁর পরিবারের লোকজন ছেলের খোঁজ শুরু করেন। বুধবার জয়গাঁ সীমান্তে গিয়ে নানাভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। স্থানীয় পুলিশ স্টেশন দূতাবাসে ঘুরে বেড়ান। পরে মৃত্যুর খবর এলেও দেহ কবে কীভাবে দেওয়া হবে তা কিছুই জানানো হচ্ছিল না বলে অভিযোগ। এ দিন সকালে পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করেন। কলকাতার নবান্নের সচিব পর্যায়ে গতিবিধি শুরু হয়। শেষে দুই দেশের দূতাবাসের মাধ্যমে বিকেল নাগাদ অংশুর দেহ পেয়েছেন তাঁর আত্মীয়েরা। মন্ত্রী বলেন, ‘‘অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। আমরা পরিবারটির পাশে আছি।’’
রাতে ডাবগ্রামের রবীন্দ্র সরণিতে কফিনবন্দি দেহ আসতেই শোকের ছায়া নেমে আসে। শাসক দলের নেতারা সেখানে যান। অংশুর বাবা অনুপমবাবু পেশায় দর্জি। পরিবার সূত্রের জানা গিয়েছে, অংশু শিলিগুড়ি পলিটেকনিক কলেজ থেকে পাশ করে সহকারি বাস্তুকার হিসাবে একটি নির্মাণ সংস্থায় যোগ দেন। তারাই ভুটানে কাজ করছিল। দু’বছর আগে বিয়ে করেন। আট মাসের একটি পুত্রসন্তান রয়েছে অংশুর। মঙ্গলবারের পর থেকে তাঁর স্ত্রী রিয়া এবং মা শিপ্রাদেবী কার্যত কথা বলার শক্তি হারিয়েছেন।
অনুপমবাবু বলেন, ‘‘ঘটনার দিন বিকেলে সাড়ে ৩টেতেও কথা হয়। দুর্ঘটনার খবর জানার পর রাতে কোথাও যোগাযোগ করতে পারেনি। বুধবার সাতসকালে জখম হওয়ার কথা বলে ভুটান থেকে ফোন আসে। জয়গাঁ সীমান্ত গেটে আসতে বলে। কী যে হয়ে গেল!’’