প্রশাসন জানিয়েছে, এই বাজারের দোকানঘরের দাম বাড়ানো হচ্ছে।
ভাড়া ছিল বেশ কম। তাও বাড়েনি প্রায় ২৫ বছর। অনেকে দোকান নিয়েও বেশ ফেলে রেখে দিয়েছিলেন বছরের পরে বছর। আবার অনেক দোকান হাতবদলও হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে খোদ সিলিগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজারেই। এ বার সেই পরিস্থিতি অনেকটাই বদলে যাবে বলে আসা করছেন প্রশাসন ও ব্যবসায়ীরা। প্রশাসন জানিয়েছে, এই বাজারের দোকানঘরের দাম বাড়ানো হচ্ছে।
শিলিগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজারে বর্তমানে দোকানের ন্যূনতম সরকারি ভাড়া মাসে ২৫ টাকা। নতুন ভাড়ার নির্দেশিকা শীঘ্রই জারি করতে বলেছে জেলা প্রশাসন। বাজার কমিটির চেয়ারম্যান তথা জেলাশাসক জয়শী দাসগুপ্ত বলেন, ‘‘আড়াই দশক পরে পুরনো ভাড়া বদলানো হচ্ছে। নতুন ভাড়া শীঘ্রই কার্যকর করতে বলা হয়েছে।’’ বাজারের দোকানগুলিতে এখনও ন্যূনতম ২৫ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ১ টাকা পর্যন্ত বর্গফুট হিসেবে ভাড়া নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। ২৫ পয়সা থেকে বেড়ে ১২ টাকা এবং ১ টাকা থেকে বেড়ে তা ১৫ টাকা পর্যন্ত প্রতি বর্গফুট করার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। বাজার কমিটির তরফে জানা গিয়েছে, দোকান, চাতাল, স্টল, গোডাউন মিলিয়ে অন্তত ১০ রকমের জায়গার সরকারি ভাড়া ধার্য রয়েছে। অনেকেই ভাড়া দেয় না। প্রায় ১০০ বর্গফুট থেকে শুরু করে থেকে শুরু করে আড়াই হাজার বর্গফুটে সাড়ে তিনশোরও বেশি স্টলে বেচাকেনা হয় ওই বাজারে। বাজারের ব্যবসায়ী তথা শিলিগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজার কমিশন এজেন্ট ইউনিয়নের সম্পাদক শিব কুমার বলেন, ‘‘সরকার ভাড়া বাড়ানোর মতো সিদ্ধান্ত নিলে আমাদের সঙ্গে আলোচনা করা দরকার। কমিটিতে প্রতিনিধিত্ব চেয়ে বার বার আবেদন করেছি।’’
বাজার কমিটি সূত্রে খবর, দীর্ঘ দিন আগে থেকে জলের দরে ভাড়া থাকায় তা দিয়ে অনেকেই দোকান টিকিয়ে রেখেছিল। পরে তার অনেক হাতবদল হয়েছে। বাজার কমিটি জানিয়েছে, তা একেবারেই বেআইনি। গত ৬ মাসে মাসে এরকম বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীকে অবৈধভাবে দোকান চালাতে বারণ করা হয়েছে।
নিয়ন্ত্রিত বাজার কমিটির সচিব দেবজ্যোতি সরকার বলেন, ‘‘বেআইনি ভাবে অনেক দোকান হাতবদল হয়েছে। অনেককে বারণ করা হয়েছে। আমরা ব্যবস্থা নেব।’’
কর্তৃপক্ষের আশা, ভাড়া বেড়ে গেলে এ সব অবৈধ কারবার বন্ধ হবে। সত্যিই যাঁরা ব্যবসা করতে চান, তাঁরাই বাজারে থাকবেন। কারণ অত টাকা ভাড়া দেওয়ার পরে দোকান ফেলে রাখার ঝুঁকি নিতে চাইবেন না কেউই। বাজার কমিটির এক কর্তা জানান, ভাড়া বেড়ে গেলে মূল মালিক যদি অন্য কাউকে দোকান চালাতে দিলে, যিনি তা চালাবেন, তাঁকে ভাড়ার অতিরিক্ত টাকা গুণতে হবে। সেই ঝুঁকি নেওয়ার লোক কম। তাই দোকান বেচাকেনার সঙ্গে যুক্ত ফড়ে ও দালালদের দাপট বাজার থেকে কমে যাবে বলে আশা করছেন কর্তারা।
ব্যবসায়ীদের সংগঠন ফোসিনের সম্পাদক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘ওই বাজারে সরকারি নিয়ম দীর্ঘ দিন ধরেই উপেক্ষা করা হত। আগে কড়া ব্যবস্থা নিলে এখন এই সমস্যায় পড়তে হত না।’’