শীতের আমেজে উৎসাহীদের ভিড় শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি পার্কে। ছবি: বিনোদ দাস।
হাতে কুপন। নেই প্রশাসনের কোনও অনুমতি। পিকনিক করতে গেলেই মাথাপিছু টাকা দিতে হচ্ছে শহরবাসীকে। বাইক, গাড়ি নিয়ে গেলেও দিতে হবে আলাদা করে টাকা। এ ভাবে কয়েক হাজার টাকা বেআইনি ভাবে আদায় করছে একদল যুবক। শিলিগুড়ি সংলগ্ন তড়িবাড়ি, গুলমা, বাগডোগরা সংলগ্ন এলাকা সর্বত্র একই অবস্থা।
এলাকার উন্নয়ন কিংবা পিকনিক স্পট পরিষ্কার রাখা হবে— এই কথা বলে শিলিগুড়ি সংলগ্ন বেশকিছু পিকনিক স্পটে এই কায়দাতেই তোলাবাজি চলছে বলে অভিযোগ। এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মদতে কিছু যুবক এই টাকা তুলছে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। আদায়কারীদের কাছে টাকার হিসেব যেমন নেই, তেমনি যে কথা বলে টাকা নেওয়া হচ্ছে তার কোনও প্রশাসনিক অনুমতিও নেই।
বেঙ্গল সাফারির পিছনে রয়েছে তড়িবাড়ি পিকনিক স্পট। যেখানে প্রতি বাইক ৩০, টোটো ৫০, ছোট গাড়ি ১০০ ও বাসপ্রতি ২০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। অভিযোগ, গাড়ি ছাড়াও মাথাপিছু টাকাও নেওয়া হয়। পিকনিকের এক একটি দলে কম করে ৬-১০ জন থেকে থাকেন। আবার বড় দলে প্রায় ৫০-৭০ জন থাকেন। প্রতিটি স্পটে ঢোকার আগেই সমস্ত গাড়ি, বাইক আটকে এই টাকা নেওয়া হয়। টাকা না দিলে তাঁদের আর সেখানে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। ফলে একপ্রকার বাধ্য হয়েই টাকা দিতে হচ্ছে পিকনিক করতে আসা লোকজনকে। এ নিয়ে বিবাদ-বচসাও হচ্ছে নানা জায়গায়। অভিযোগ, প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ করছে না এদের বিরুদ্ধে। শনিবার তড়িবাড়িতে বন্ধুদের সঙ্গে পিকনিক করতে গিয়েছিলেন লেকটাউনের ললিত রায়। ৮টি বাইক ও ২টি গাড়ি নিয়ে যাওয়ায় ৪৪০ টাকা দিতে হয়। সেখানে এই টাকা দেওয়া নিয়ে বিবাদও হয়। কিন্তু শেষমেশ অন্যত্র কোথায় যাবেন ভেবে টাকাটা বাধ্য হয়েই দিয়ে দেন তিনি। তবে তাঁর বক্তব্য, এ ভাবে পিকনিক স্পটগুলিতে তোলাবাজি চললে আগামী দিনে কেউ যাবেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কিছু জায়গায় কুপন দেওয়া হলেও অনেক জায়গায় কুপন ছাড়াই টাকা তোলা হচ্ছে। এ বিষয়ে অভিযোগ জমা পড়লে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্তারা।