Teesta River Bed

বিপর্যয়ে তিস্তার নদীখাত উঁচু হয়েছে, রিপোর্ট ঘিরে চিন্তা

জলপাইগুড়ি জেলা ছাড়াও আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার এবং শিলিগুড়ি সমতলের আধিকারিকেরা ছিলেন।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২৪ ০৯:২২
Share:

গতিপথ বদলানোর পর উঁচু হয়ে যাচ্ছে তিস্তার নদী খাত। জলপাইগুড়িতে তোলা ছবি। ছবি - সন্দীপ পাল।

গতিপথ বদলানোর সঙ্গে সঙ্গে তিস্তা নদীর খাতও উঁচু হয়েছে অনেকটাই, সেচ দফতরে জমা পড়া রিপোর্ট উঠে এসেছে এমনই তথ্য।

Advertisement

গত বছর অক্টোবর মাসে সিকিমে দক্ষিণ লোনাক হ্রদ ভেঙে বিপর্যয় হয়েছিল। পাহাড় থেকে সমতল— তিস্তা নদীর পুরো গতিপথে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সে বিপর্যয়ের ধাক্কাতেই তিস্তা গতিপথ বদলেছিল কিছু জায়গায়। উপগ্রহ ছবিতে সে বদল ধরাও পড়েছিল। গতিপথ কতটা বদলেছে তা নিয়ে সমীক্ষা হয়েছে, তবে সে রিপোর্ট এখনও আসেনি। এরই মাঝে সেচ দফতরে জমা পড়া আর একটি রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, তিস্তা নদীর গতিপথ উঁচু হয়েছে। পাহাড় থেকে সমতল সর্বত্র উঁচু হয়ে গিয়েছে তিস্তার নদীখাত। কতটা উঁচু হয়েছে? সেচ দফতর জানিয়েছে, অন্তত দেড় মিটার উঁচু হয়েছে, যা কিনা ‘অনেকটাই’ বলে সেচ দফতরের দাবি। এর জেরে, যে সব এলাকায় বাঁধের উচ্চতা কিছুটা কম, সেখানে এ বার বর্ষায় বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা রয়েছে। সোমবার উত্তরবঙ্গের চার জেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বৈঠকে বসেছিল সেচ দফতর। সেখানে তিস্তাই ছিল মূল আলোচনার কেন্দ্রে। এখনও পর্যন্ত প্রায় ১০৬ কোটি টাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণের কাজ হচ্ছে। যার মধ্যে তিস্তায় বন্যা নিয়ন্ত্রণের কাজই মুখ্য।

সোমবার জলপাইগুড়ির সেচ ভবনে বৈঠকে হয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলা ছাড়াও আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার এবং শিলিগুড়ি সমতলের আধিকারিকেরা ছিলেন। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিম তথা উত্তরবঙ্গের আধিকারিকেরা এবং কেন্দ্রীয় জল কমিশনের আধিকারিকেরাও ছিলেন। সেচ দফতরের উত্তরবঙ্গের মুখ্য বাস্তুকার কৃষ্ণেন্দু ভৌমিক বলেন, “তিস্তার নদীখাত উঁচু হয়ে যাওয়া যথেষ্ট আশঙ্কাজনক। এক থেকে দেড় মিটার উঁচু হয়ে যাওয়া বিপজ্জনকও। যেখানে বাঁধের উচ্চতা কম সেখানে বাঁধের উচ্চতা বাড়াতে হবে, কিছু এলাকায় স্পার তৈরি করতে হবে, সে সব কাজ করা হচ্ছে।”

Advertisement

বর্তমানে ভুটান থেকে জল ছাড়ার তথ্য বা বৃষ্টির তথ্য সেচ দফতর পায়। কিন্তু সেটি আসে তিন ঘণ্টা পরে। এই ব্যবধান কমিয়ে এক ঘণ্টার মধ্যে তথ্য পেতে কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সহযোগিতা নিচ্ছে সেচ দফতর। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের উত্তরবঙ্গ এবং সিকিমের মুখপাত্র গোপীনাথ রাহা বলেন, “এ দিনের বৈঠকে সমন্বয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। তিস্তা নিয়ে তথ্য আদানপ্রদান হয়েছে। সিকিমেও তিস্তার বুকে পলি জমেছে। পাহাড়ের গতিতেও নদী খাঁত উঁচু হয়েছে তিস্তার। এটা যথেষ্ট আশঙ্কার।”

এ দিনের বৈঠকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, বন্যা নিয়ন্ত্রণের যাবতীয় কাজ চলতি মে মাসের মধ্যে সেরে ফেলতে। দেশে ইতিমধ্যে বর্ষা ঢুকেছে। জুন থেকে ভরপুর বৃষ্টি শুরু হয়ে যাবে ধরে নিয়ে সব নদীর পার বাঁধাই, বাঁধ সংস্কারের যেখানে প্রয়োজন শেষ করতে বলা হয়েছে। বিশেষত, তিস্তা নদীর দু’পারে বন্যা নিয়ন্ত্রণের কোনও কাজ মে মাসের পরের জন্য ফেলে রাখা যাবে না বলেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement