অমুদাকে ঘিরে প্রত্যাশা বাড়ছে ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে

কেউ চাইছেন মশার উপদ্রব থেকে মুক্তি পেতে, কেউ বর্ষার সময়ে বাড়ির সামনে নর্দমার জল উপচে পড়ায় ক্ষুব্ধ। রাত হলেই কুকুরের চেঁচামেচি। পথচারীদের দিকে তেড়ে যায় কুকুর। কুকুরদের নির্বীজকরণের দাবি তুলেছেন কোনও বাসিন্দা, কারও পরামর্শ এলাকা জুড়ে গাছ লাগানো হোক। এমনই নানা দাবি-আর্জি শিলিগুড়ির ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের। শহরের শুধুমাত্র এই ওয়ার্ড থেকেই পুরভোটে জয়ী হয়েছেন নির্দল প্রার্থী।

Advertisement

সংগ্রাম সিংহ রায়

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১১ মে ২০১৫ ০২:৫১
Share:

কেউ চাইছেন মশার উপদ্রব থেকে মুক্তি পেতে, কেউ বর্ষার সময়ে বাড়ির সামনে নর্দমার জল উপচে পড়ায় ক্ষুব্ধ। রাত হলেই কুকুরের চেঁচামেচি। পথচারীদের দিকে তেড়ে যায় কুকুর। কুকুরদের নির্বীজকরণের দাবি তুলেছেন কোনও বাসিন্দা, কারও পরামর্শ এলাকা জুড়ে গাছ লাগানো হোক। এমনই নানা দাবি-আর্জি শিলিগুড়ির ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের। শহরের শুধুমাত্র এই ওয়ার্ড থেকেই পুরভোটে জয়ী হয়েছেন নির্দল প্রার্থী। সেই জয়ী নির্দলের সমর্থন আদায়ে চেষ্টা করেছিল বামেরা। চেষ্টা করেছিল তৃণমূলেরাও। অবশেষে গত শনিবার নানা টানাপড়েনের অবসান ঘটিয়ে জয়ী নির্দল অরবিন্দ ঘোষ ওরফে অমু-দা বামেদের সমর্থনের লিখিত আশ্বাস দিয়েছেন। মেয়র পরিষদ বা অন্য পদের প্রস্তাব ফিরিয়ে শুধুমাত্র নতুন পুরবোর্ডের ‘কোর’ কমিটিতে থাকতে রাজি হয়েছেন তিনি। সমর্থনের চিঠিতে উন্নন এবং পরিষেবা সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি প্রস্তাবও দিয়েছেন অরবিন্দবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘কোনও পদ আমার চাই না। তবে উন্নয়নের প্রস্তাবগুলি রূপায়ণে সুবিধে হবে ভেবেই কোর কমিটিতে থাকতে রাজি হয়েছি।’’

Advertisement

যাঁর সমর্থনের উপরে নির্ভর করে বামেরা পুরবোর্ড গড়ার প্রস্তুতি শুরু করেছে, সেই অরবিন্দবাবুর কাছে কী প্রত্যাশা করছেন তাঁর নিজের ওয়ার্ডের বাসিন্দারা? তাঁর সমর্থনের ভিত্তিতেই বোর্ড চলবে ধরে নিয়ে প্রত্যাশাও বেড়ে চলছে। ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের কাছে অমু-দা নামেই পরিচিত তিনি। বাসিন্দাদের অধিকাংশই চাইছেন, সামনে বর্ষার আগে কাউন্সিলর নিকাশি এবং পরিচ্ছন্নতাতে অগ্রাধিকার দিন।

পুরভোটের প্রক্রিয়া চলাকালীন বা তার আগে পুরসভায় প্রশাসকদের দায়িত্বে থাকায়, এলাকায় কেউ কাউন্সিলর ছিলেন না। সে সময়ে নিকাশি এবং সাফাই নিয়ে অনেক অভিযোগ উঠেছে এলাকায়। ফলে মশার উপদ্রবও বেড়েছে বলে অভিযোগ। ওয়ার্ডের বাসিন্দা উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক দেবব্রত মিত্র বলেন, ‘‘নিকাশি ব্যবস্থার পাশাপাশি ছোট রাস্তার উপরে পার্কিং নিয়েও সমস্যা রয়েছে। অমুদা নিশ্চই এই দৈনন্দিন সমস্যাগুলির সমাধান করবেন।’’ অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক, লেখক গৌরীশঙ্কর ভট্টাচার্যও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তিনিও একইরকম প্রত্যাশার কথা জানালেন। তিনি বলেন, ‘‘এলাকার সবচেয়ে বড় সমস্যা জল নিকাশি ও নর্দমা পরিষ্কার না হওয়া। এটা দ্রুত কার্যকর করা প্রয়োজন। জঞ্জাল পরিষ্কার ঠিক মতো হচ্ছে কি না, তা দেখা দরকার।’’

Advertisement

পরিষেবার সঙ্গে পরিবেশও উঠে এসেছে বাসিন্দাদের প্রত্যাশায়। পেশায় হোটেল ব্যবসায়ী কাকলি সরকারের দাবি, ‘‘এলাকায় সবুজ কমে যাচ্ছে। তাই চাই অরবিন্দবাবু যেন আগামী পাঁচ বছরে ওয়ার্ডে প্রচুর গাছ লাগান।’’ প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের ব্যবহারকে পুরোপুরি নিষিদ্ধ করতে এলাকায় সচেতনতা এবং আন্দোলন শুরু করতে চান অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ক আধিকারিক আশিস কু্ণ্ডু। তাঁর বক্তব্য, ‘‘শুধু প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ নয়, সমস্ত রকম প্লস্টিক বর্জন করা উচিত। কেউ তা না মানলে আইন করে জরিমানার ব্যবস্থা করা হোক। এ নিয়ে আমরাও রাস্তায় নামতে চাই। অমু-দা সেই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিন।’’ পথ কুকুরদের নির্বীজকরণ করার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন সমাজকর্মী শেখর পাল। সে কাজও ১৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে শুরু হতে পারে বলে তিনি মনে করছেন। শেখরবাবু বলেন, ‘‘এর আগে কুকুর নির্বীজকরণ করা শুরু করেছিল পুরসভা। তা বন্ধ করে দেওয়া হয় কোনও কারণ ছাড়াই। সেটা ফের চালু করতে কাউন্সিলর অরবিন্দবাবুকে অনুরোধ জানাব।’’ এনজিও কর্মী শেখর সরকারের দাবি, ছোটদের খেলার জন্য নতুন কয়েকটি পার্ক তৈরি হোক। বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির আধিকারিক প্রদীপ সরকারের পরামর্শ ‘‘অরবিন্দবাবুকে বলব বাড়ির নকশা তৈরির মধ্যে বিদ্যুতের মিটারবক্স বসানোর জন্য আলাদা জায়গা রাখা হোক। তাতে নিরাপত্তার দিকটা অনেকটাই সুরক্ষিত থাকবে।’’

নানা প্রত্যাশা, দাবি কতটা পূরণ হবে তা সময় বলবে। তবে, অমু-দাকে ঘিরে প্রত্যাশা বাড়ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement