ভোটকে হারিয়ে দিল ক্রিকেট

সকাল থেকেই রবিবাসরীয় ভোটের প্রচারের উত্তেজনা ছিল শহরে। প্রচারে জোর দিয়েছিল সব পক্ষই। কিন্তু রাত বাড়তেই ভোটকে হারিয়ে দিল ক্রিকেট। গোটা শহরই চলে গেল ক্রিকেটের কব্জায়। আপাতত ভোট ভুলে মানুষের চোখ-কানের দখল চলে গেল বিরাট কোহালি, ধোনিদের হাতে। ধোনির ব্যাট ছুঁয়ে বল বাউন্ডারির বাইরে যেতেই রাত এগারোটাতে সেবক মোড়, হাসমিচকের চেহারাটা বদলে গেল নিমেষেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৬ ০২:৫২
Share:

ভারত-অস্ট্রেলিয়া টি টোয়েন্টি ম্যাচে ভারতের জয়ের পর উল্লাসে ফেটে পড়লেন শিলিগুড়ির বাসিন্দারা। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

সকাল থেকেই রবিবাসরীয় ভোটের প্রচারের উত্তেজনা ছিল শহরে। প্রচারে জোর দিয়েছিল সব পক্ষই। কিন্তু রাত বাড়তেই ভোটকে হারিয়ে দিল ক্রিকেট। গোটা শহরই চলে গেল ক্রিকেটের কব্জায়। আপাতত ভোট ভুলে মানুষের চোখ-কানের দখল চলে গেল বিরাট কোহালি, ধোনিদের হাতে।

Advertisement

ধোনির ব্যাট ছুঁয়ে বল বাউন্ডারির বাইরে যেতেই রাত এগারোটাতে সেবক মোড়, হাসমিচকের চেহারাটা বদলে গেল নিমেষেই। ঝড়ের গতিতে বাইক ছুটছে মোড়ের দিকে। শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কয়েকশো বাইকে হাজির উচ্ছ্বসিত সমর্থকরা। কারও হাতে ঢাউস তেরঙ্গা পতাকা, কারও হাতে টি ২০ বিশ্বকাপের ‘রেপ্লিকা’। কেউ আবার গলায় ঢোল ঝুলিয়ে নেমে পড়েছেন রাস্তায়। তার পিছনে দু’হাত তুলে নাচছেন অনেকেই। চারিদিকে পুড়ছে আতসবাজি। রবিবার অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ভারতের জয়ের পর এ ভাবেই ‘সেলিব্রেট’ করল শিলিগুড়ির ক্রীড়াপ্রেমী জনতা। রাস্তায় দেখা গিয়েছে অনেক মহিলাকেও। এই চিত্র ছিল শহরের বেশির ভাগ এলাকাতেই।

জয়ের পরে উচ্ছ্বাস এর আগেও দেখেছে শিলিগুড়িবাসী। পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সঙ্গে জয়ের পরেও পথে নেমেছিল শিলিগুড়ির ক্রীড়াপ্রেমীরা। কিন্তু তা ছিল শুধুই আবেগের। এদিন অস্ট্রেলিয়াকে সত্যিকারের লড়াইয়ে হারানোর পরে উচ্ছ্বাস, আবেগ খানিকটা যেন বেশিই ছিল। বিরাট কোহলির কাঁধে ভর করে জয় আসতেই ফের রাস্তায় নামল শিলিগুড়ি। হারের দোরগোড়া থেকে ফিনিক্স পাখির মতো ঘুরে দাঁড়িয়ে জয়, উচ্ছ্বাসের আবেগ পৌঁছেছিল চরমে। প্রধাননগর এলাকার বাসিন্দা বিজয় কল্যাণী, দেশবন্ধুপাড়ার তাপস মৈত্র, গেটবাজারের গোপাল লামা কিংবা মিলনপল্লির সৌমিত্র চক্রবর্তীদের রোখা যাচ্ছিল না। সকলেই হুল্লোড় করছেন আর বিরাট কোহলিদের নামে ঘনঘন স্লোগান দিচ্ছেন। অত্যুৎসাহী কেউ টিন পেটানো শুরু করেছিলেন।

Advertisement

জয়ের পরেই পতাকা উড়িয়ে, ড্রাম বাজিয়ে, গলা ফাটিয়ে শহরের হাসমিচক, সেবক মোড়ে রাস্তায় নামে কয়েকশো ক্রীড়াপ্রেমী। মূলত প্রায় অবরোধই হয়ে গিয়েছিল অত্যুৎসাহীদের দাপটে। পাড়ায়, গলিতে সব জায়গায় উচ্ছ্বাস ছিল বাঁধ ভাঙা। ধোনির ব্যাটে শেষ বলটা সীমানা ছুঁতেই দর্শকরা বুঝে গিয়েছিলেন ভারত সেমিফাইনালে পৌঁছে গিয়েছে। খানিকটা অবিশ্বাসের ঘোরে, খানিকটা আনন্দে রাতের শিলিগুড়িবাসীর চিৎকার শোনা যাচ্ছিল কয়েক মাইল দূর থেকেও।

একে রবিবার ছুটির দিন। তাতে অস্ট্রেলিয়ার মতো হেভিওয়েট প্রতিপক্ষ। গোটা ম্যাচ জুড়ে খুঁড়িয়ে খেলা ভারতীয় দল জিতবে আশা করেননি অতি বড় ভারত সমর্থকও। সন্ধ্যে থেকেই পানশালাগুলিতে ভিড় জমানো অনেকেই বাড়ির দিকে যাওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছিলেন। তার মধ্যেই বিরাট, বিরাট চিৎকারে অনেকেই থমকে দাঁড়ান। তারপরে বিরাটের একের পর চার। অবিশ্বাস্য ইনিংস দেখে তাঁরা চমকে যান। তারপরে গোটা দেশের সঙ্গে ইতিহাসের সাক্ষী হতে পেরে উদ্বেলিত শিলিগুড়িবাসী। জয়ের উৎসব চলে অনেক রাত পর্যন্ত। খেলা শেষ হওয়ার কয়েক ঘন্টা পরেও অনেককে দেখা গিয়েছে রাস্তার উপরে বসে আনন্দ করতে। আনন্দ করবারই কথা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement