—ফাইল চিত্র।
পাহাড়ে আবার শক্তি পরীক্ষায় বিমল গুরুং এবং বিনয় তামাং শিবির। আজ, শনিবার কার্শিয়াঙে বিনয়দের সভা এবং মিছিল। প্রাক্তন সেনা কর্মীদের সংগঠনের ডাকে সভা করা হচ্ছে। আর কাল, রবিবার গুরুং সাড়ে তিন বছর পরে ঘরে ফিরে জনসভা করবেন। শুক্রবার থেকে দুই শিবিরের প্রস্তুতি তুঙ্গে উঠেছে। বিনয় তামাং, অনীত থাপারা সভায় নাম দিয়েছেন ‘পরিবর্তন সভা’। এ দিন পাহাড়ের বিভিন্ন ব্লকের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক সেরেছেন পাহাড়ে ক্ষমতাসীন দুই নেতা। সেখানে গুরুং এ দিন সকাল থেকেই ছিলেন ডুয়ার্সে। ওদলাবাড়িতে এক বৈঠক করার পর তিনি একসময়কার নিজের ঘাঁটি বলে পরিচিত শিপচুতেও যান। পাহাড়ের পর ডুয়ার্সে নিজের সংগঠনকে জোরদার করার কাজ গুরুং শুরু করে দিয়েছেন।
গুরুংপন্থী মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেছেন, ‘‘পাহাড় তো আছেই, তরাই এবং ডুয়ার্সেও বিজেপি হারানোই আমাদের লক্ষ্য। সভাপতি বাড়ি ফেরার পর আরও জোরদার প্রচার শুরু হয়ে যাবে।’’ উল্টো দিকে অবশ্য থেমে নেই গুরুংয়ের বিরোধী শিবিরও। পরিবর্তন সভা নিয়ে জিটিএ চেয়ারম্যান তথা বিনয়পন্থীদের সাধারণ সম্পাদক অনীত থাপা বলেছেন, ‘‘নতুন চিন্তা, নতুন দিশা এখন পাহাড়ের স্লোগান। অন্য অনেকে এখনও পাহাড়ের চিন্তাভাবনা নিয়ে পিছিয়ে। তাই পাহাড়ের গর্ব প্রাক্তন গোর্খা রেজিমেন্টের সেনাকর্মীরা আমাদের পাশে এসেছেন।’’ তাঁদের ডাকেই জনসভা, মিছিল বলে জিটিএ চেয়ারম্যান জানিয়েছেন।
পরপর দু’দিন পাহাড়ে দু’টি জনসভা ও মিছিলকে ঘিরে প্রবল যানজটের আশঙ্কা রয়েছে। দার্জিলিং জেলা পুলিশের তরফেও দুই তরফেই যোগাযোগ করে সভার পার্কিংয়ের ব্যবস্থা ঠিকঠাক রাখার জন্য বলা হয়েছে। রবিবার গুরুংয়ের সভা হবে মোটরস্ট্যান্ডে। আর শনিবার কার্শিয়াংয়ের মাঠে অনীতদের সভা। মিছিল শুরু হবে কার্শিয়াং টুরিস্ট লজ থেকে। তাতে সপ্তাহের শেষ দু’দিন পাহাড়ে রাজনৈতিক উত্তাপ বজায় থাকবে বলেই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা মনে করছেন। তাঁরা জানান, গুরুং পাহাড়ে পৌঁছনোর পরে পরিস্থিতি কী দাঁড়ায়, সেটা দেখার। দু’পক্ষকে তৃণমূল নেতৃত্ব শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রেখে সংযত থাকতে বলেছেন। নেতারা তা হয়তো বা মানবেন। কিন্তু কর্মী বা সক্রিয় স্থানীয় নেতানেত্রীরা কী করেন, তা নিয়ে দুই শিবিরেই চিন্তা রয়েছে। একবার দু’পক্ষ মুখোমুখি হওয়া, ছুরিকাহত হওয়ার ঘটনা ঘটলেও তা সামাল দেওয়া হয়েছে।
তবে পাহাড়ের এক দল নেতা মনে করছেন, রাজ্যের শাসকদল দু’পক্ষের মধ্যে সমঝোতার রাস্তা খোলার চেষ্টা নিশ্চয়ই করছে। তাতে কাজ না হলেও বিমল পাহাড়ে গেলেও স্থায়ীভাবে পাহাড়ে থাকবেন না। তিনি ডুয়ার্সের দিকেই বেশি নজর দেবেন। পাহাড়ে মোর্চার দুই শিবিরের ক্ষমতা তুল্যমূল্য। কিন্তু ডুয়ার্সে গুরুংয়ের নিয়ন্ত্রণ বেশি। সেটা বজায় রাখার চেষ্টাও করবেন গুরুং।