স্কুলে গণ্ডগোলে পরীক্ষার হল প্রায় খালি। নিজস্ব চিত্র
ফের বার্ষিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নিয়ে দুই শিক্ষিকার টানাপড়েনের জেরে চরম নাকাল হতে হল স্কুলের ছাত্রীদের। মঙ্গলবার বালুরঘাটের রমেশচন্দ্র উচ্চবালিকা বিদ্যালয়ে ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দ্বিতীয় অর্ধে পরীক্ষা ব্যাহত হয়। প্রতিবাদে অভিভাবকেরা ডিআইকে ঘিরে তুমুল বিক্ষোভ দেখান। আগামী সোমবার স্কুলের দু’পক্ষ শিক্ষককে নিয়ে বৈঠক করে সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দেন ডিআই নারায়ণ সরকার। গত মাসে ওই স্কুলটিতে উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষার্থী ছাত্রীদের দু’রকম প্রশ্নপত্র দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে বিস্তর গোলমাল হয়।
এ দিন ওই স্কুলে অঙ্ক পরীক্ষা ছিল। অভিযোগ, টিচার ইনচার্জ সুইটি টুডু এবিটিএর প্রশ্নপত্রের বদলে এক সহশিক্ষকের তৈরি প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নিতে উদ্যোগী হন। সেই সময়ে প্রধান শিক্ষিকার দাবিদার স্বপ্না চক্রবর্তীর পক্ষের শিক্ষিকাদের একাংশ তাতে আপত্তি তোলেন বলে অভিযোগ। দু’পক্ষের মধ্যে ছাত্রীদের নিয়ে টানাটানি শুরু হলে সুইটিদেবী ও তাঁর পক্ষের শিক্ষিকারা মিলে স্কুলের একটি ঘরে পরীক্ষার ব্যবস্থা করেন। অন্য পক্ষ আবার আলাদা একটি ঘরে তাঁদের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করেন। দু’পক্ষের চাপ ও টানাটানির অভিযোগে বার্ষিক পরীক্ষা দিতে আসা স্কুলের ছাত্রীরা চরম বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ে যায়। অভিভাবকেরা স্কুলে ঢুকে প্রতিবাদে সরব হলে তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। গোলমালের খবর পেয়ে জেলা স্কুল পরিদর্শক (ডিআই) নারায়ণ সরকার ছুটে যান। কিন্তু ডিআই চলে আসার পর ফের দু’পক্ষের শিক্ষক-শিক্ষিকার মধ্যে গোলমালের জেরে দ্বিতীয় অর্ধে পরীক্ষা ব্যাহত হয়।
প্রায় ৮ মাস ধরে স্কুল প্রধান শিক্ষিকা পদে স্বপ্না চক্রবর্তী নিয়োগ পেয়ে ওই স্কুলে যোগ দিতে এলে পদ্ধতিগত ত্রুটির অভিযোগ তুলে টিচার ইনচার্জ সুইটি টুডু তাঁকে দায়িত্ব হস্তান্তর করেননি। বরং নিজের পদে বহাল রয়েছেন বলে অভিযোগ। আদালতে মামলা করে তিনি ওই দায়িত্বে আছেন বলে সুইটিদেবীর দাবি। অন্য দিকে স্বপ্নাদেবীর দাবি, ‘‘প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েও প্রধান শিক্ষিকার দায়িত্ব পাইনি। এ নিয়ে সহশিক্ষকেরাও দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে গিয়েছেন।’’ ঘটনাকে ঘিরে অভিভাবকদের মধ্য চরম ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। দীর্ঘ অচলাবস্থা নিরসনে কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ করছেন না বলে তাঁরা অভিযোগ করেন।
এ দিন প্রশ্নপত্র ইস্যুতে সুইটিদেবী অভিযোগ করেন, বাইরে থেকে প্রশ্নপত্রে কিনে পরীক্ষা নেওয়ার বদলে স্কুলের শিক্ষিকদের তৈরি প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নিতে গেলে ওঁরা বাধা দেন। স্বপ্নাদেবীর পক্ষে সহকারী প্রধানশিক্ষিকা শিলা ঘোষের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘শিক্ষকদের তৈরি প্রশ্নপত্র না পেয়েই বাধ্য হয়ে কেনা প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এর পর সুইটিদেবী তাঁর অনুগতদের দিয়ে তৈরি দু’তিনটি বিষয়ের প্রশ্নপত্রে জোর করে পরীক্ষা নিতে গিয়ে সমস্যা তৈরি করছেন।’’