বিচার?: টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে অভিযুক্ত কিশোরকে। মালদহে। নিজস্ব চিত্র
ইংরেজবাজার শহরের পর কোতোয়ালি।
এ বার মোবাইল চোর সন্দেহে এক কিশোরকে গণপিটুনির অভিযোগ উঠল। শুধু তাই নয়, ওই কিশোর দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে উত্তেজিত জনতা ধাওয়া করে তাকে ধরে মাটিতে ফেলে টেনে-হিঁচড়ে অনেক দূরে নিয়ে আসে। পরে পুলিশ ওই কিশোরকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটে ইংরেজবাজার ব্লকের কোতোয়ালি বাজারে। জেলায় ফের গণপিটুনির পরপর ঘটনায় পুলিশ ও প্রশাসনিক মহলে উদ্বেগ ছড়িয়েছে।
গত রবিবারই ইংরেজবাজার শহরের রবীন্দ্রভবন এলাকায় গাড়ির ব্যাটারি এবং একটি দোকানে ঢুকে ক্যাশবাক্স থেকে টাকা চুরিচক্রের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে এক যুবককে গাছের সঙ্গে শিকল ও দড়ি দিয়ে বেঁধে গণপিটুনি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। অভিযোগ, পরে আরও এক যুবককে ডেকে নিয়ে এসে দেওয়া হয় গণপিটুনি।
সেই রেশ কাটতে না কাটতেই, বুধবার সকালে ইংরেজবাজার ব্লকের কোতোয়ালি বাজারে এক কিশোরকে মোবাইল চোর সন্দেহে গণপিটুনির অভিযোগ উঠল স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের বিরুদ্ধে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে কোতোয়ালি বাজারে এসেছিলেন অলক রায় নামে এক যুবক। ওই কিশোর তাঁর জামার পকেট থেকে মোবাইল ফোন চুরির চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। ওই যুবকের দাবি, তিনি কিশোরটিকে হাতেনাতে ধরে ফেলেছিলেন। কিন্তু সে পালানোর চেষ্টা করে। বাজারে থাকা লোকজন তাকে ধাওয়া করে। বাজার থেকে প্রায় ৫০০ মিটার দূরে ওই কিশোরকে ধরে ফেলেন তাঁরা। অভিযোগ, এর পরেই শুরু হয় গণপিটুনি। ওই কিশোরকে টেনেহিঁচড়ে সেই জায়গা থেকে ফের বাজারে নিয়ে আসা হয়। অভিযোগ, সেখানেও তাকে মারধর করা হয়। পরে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেন। পুলিশ জানিয়েছে, ওই কিশোর অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছে। তার নাম, পরিচয় ও বাড়ির ঠিকানা জানার চেষ্টা হচ্ছে। ইংরেজবাজার থানার আইসি মদনমোহন রায় বলেন, ‘‘কোতোয়ালি বাজার থেকে এক কিশোরকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়েছে। তার কাছ থেকে অবশ্য কোনও মোবাইল বা চুরির সামগ্রী মেলেনি। ঘটনার তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’
বিডিও সৌগত চৌধুরী বলেন, ‘‘আইন হাতে তুলে নেওয়া ঠিক নয়। গণপিটুনি নিয়ে সচেতনতামূলক প্রচার করা হবে।’’