প্রতীকী ছবি।
মঙ্গলবার বেলা একটা। ইংরেজবাজার পুরভবনের গ্রাউন্ড ফ্লোরে থাকা পুরপ্রধানের চেম্বারের দরজা বন্ধ। এই ভবনের দোতলায় থাকা পুরপ্রধানের আরও একটি বিশেষ চেম্বারও বন্ধ। এই দোতলাতেই উপ-পুরপ্রধানের চেম্বার। খোলা থাকলেও খাঁখাঁ করছে ঘর। খাঁখাঁ করছে কাউন্সিলর-ইন-চার্জদের ঘরগুলিও। গোটা পুরভবনে এ দিন নির্বাচিত সদস্যদের মধ্যে হাজির শুধু কাউন্সিলর-ইন-চার্জ আশিস কুণ্ডু। দেখা গেল, তিনি নিজের চেম্বারে বসে বেশ কিছু ফাইলপত্রে সই করছেন। পুরপ্রধান নীহাররঞ্জন ঘোষের বিরুদ্ধে অনাস্থা জনিত কারণে সোমবার রাতে কলকাতায় দলীয় পর্যায়ে বৈঠকের পর মঙ্গলবার দুপুরে এই চিত্র ইংরেজবাজার পুরসভায়। কলকাতার বৈঠকে হাজির থাকা একাধিক কাউন্সিলর জেলায় ফিরে এলেও ফেরেননি পুরপ্রধান ও উপপ্রধান এবং কয়েক জন কাউন্সিলর। ফলে এ দিন যেন ঢিলেঢালা ভাব।
২৮ আগস্ট ইংরেজবাজার পুরসভার দলীয় পুরপ্রধান নীহাররঞ্জন ঘোষের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন তৃণমূলেরই ১৫ জন কাউন্সিলর। সেই দলে ছিলেন প্রাক্তন পুরপ্রধান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী, উপ-পুরপ্রধান দুলাল সরকার, প্রাক্তন পুরপ্রধান নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি, আশিস কুন্ডুরা। শেষ পর্যন্ত দলের মালদহ জেলার অন্যতম পর্যবেক্ষক গোলাম রব্বানি ও দলের জেলা সভাপতি মৌসম নুর শুক্রবার সমস্ত দলীয় কাউন্সিলরের সঙ্গে কথা বলেন। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বৈঠকের রিপোর্ট যায় রাজ্য নেতৃত্বের কাছে। সোমবার রাতে কলকাতায় ফের সমস্ত দলীয় কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক করেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
সেই বৈঠকে নীহারকে পুরপ্রধান হিসেবে বহাল রাখলেও তাঁর ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে। দলীয় সূত্রে খবর, ওই বৈঠকের পর বেশিরভাগ কাউন্সিলরই মালদহ ফিরে আসেন মঙ্গলবার। কিন্তু এ দিন পুরসভায় দিনভর একমাত্র চেয়ারম্যান-ইন-কাউন্সিল সদস্য আশিস কুণ্ডু ছাড়া কাউকেই দেখা যায়নি। তাই প্রয়োজনীয় কাজে এসে পদাধিকারীদের না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে গিয়েছেন অনেকে। যেমন, এদিন দুপুরে আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা সংক্রান্ত প্রমাণপত্রের জন্য পুরসভায় এসেছিলেন রথীন সরকার। তাঁর দাবি, সেই প্রমাণপত্রে পুরপ্রধানের স্বাক্ষর দরকার ছিল। কিন্তু নীহারকে না পেয়ে তাঁকে হতাশ হয়ে ফিরে যান। নীহার বলেন, ‘‘কলকাতায় রয়েছি। দু-একদিনের মধ্যেই ফিরব।’’