মুখ্যমন্ত্রীর হাতে লাগানো সেই পাইন গাছ। নিজস্ব চিত্র
‘গাছটি কত বড় হয়েছে, উনি এলে দেখতেন।’
প্রায় ফুট কুড়ি লম্বা একটি গাছের গায়ে হাত বোলাচ্ছিলেন মালি পঙ্কজ মণ্ডল। সোমবারও নিত্য দিনের মতো তিনি মুখ্যমন্ত্রীর লাগানো ওই গাছে জল দিয়েছেন। ভেবেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গ সফরে আসছেন, মালদহেও আসবেন। তা হলে নিশ্চয়ই তাঁর প্রিয় গৌড় ভবনেই উঠবেন। সেখানেই রয়েছে এই গাছটি। কিন্তু আশা পূরণ হয়নি। এ বার মুখ্যমন্ত্রী সেখানে না থেকে থাকছেন প্রায় এক কিলোমিটার দূরের মহানন্দা ভবনে। আর তা শুনেই মন খারাপ গৌড় ভবনের মালি পঙ্কজের। হতাশ গলায় বারবার বলছেন সেই একটাই কথা, ‘‘যদি উনি আসতেন।’’
রেলমন্ত্রী থাকাকালীন তো বটেই। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনিক বৈঠকে যতবার মালদহে এসেছেন, থেকেছেন গৌড় ভবনেই। পাওয়ার গ্রিডের নিয়ন্ত্রণে থাকা পুরাতন মালদহের গৌড় ভবন ছিল মুখ্যমন্ত্রীর পছন্দের তালিকায়। ২০১৩ সালের ২৭ নভেম্বর এই গৌড় ভবন লাগোয়া বাগানে নিজের হাতে মুখ্যমন্ত্রী লাগিয়েছিলেন অরোকারিয়া কুকি প্রজাতির একটি পাইন গাছ। গত ছ’বছরে গাছ বেড়েছে তরতরিয়ে। সযত্নে গাছটির দেখাশোনা করে চলেছেন পঙ্কজ।
আজ মঙ্গলবার প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দিতে মালদহে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর থেকে হেলিকপ্টারে করে বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ মুখ্যমন্ত্রীর নামার কথা মালদহ বিমানবন্দরে। সেখান থেকে তাঁর যাওয়ার কথা ওই মহানন্দা ভবনে। তারপর সন্ধে সাতটা থেকে মালদহের দুর্গাকিঙ্কর সদনে তার প্রশাসনিক বৈঠক করার কথা। বৈঠক শেষে ফের ফিরে আসা সেই মহানন্দা ভবনেই। পরের দিনহেলিকপ্টারে মুর্শিদাবাদ।
সূত্রের খবর, বছর দেড়েক আগে যখন তিনি মালদহে প্রশাসনিক বৈঠক করতে এলেন তখনও ছিলেন গৌড় ভবনেই। সফরসঙ্গী ফিরহাদ হাকিম ছিলেন মহানন্দা ভবনে। আচমকা মুখ্যমন্ত্রী সেই মহানন্দা ভবনে যান। তখনই তিনি মহানন্দা নদীর পারের ওই ভবনটি তাঁর ভাল লেগে যায়। সম্ভবত সে কারণেই এ বার উঠছেন মহানন্দা ভবনেই।
গৌড় ভবনের মালি পঙ্কজ মণ্ডল বলেন, ‘‘শুনলাম এ বার আর মুখ্যমন্ত্রী এখানে আসছেন না। তবে এখানে এলে হয়ত তিনি নিজে হাতে গাছে জলও দিতেন। যেমনটি করেছিলেন গত দেড় বছর আগে।’’