কোথাও ঢাকের তালে নেচে ভোট প্রার্থনা করলেন প্রার্থী। আবার কোথাও হল পদযাত্রা। প্রার্থীর সমর্থনে টোটো গাড়ির মিছিল। শেষ রবিবাসরীয় পুর ভোট প্রচারে জমজমাট ছিল জলপাইগুড়ি। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক তরজায় সরগরম হল শহর। যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ভোট নিয়ে তেমন উন্মাদনা এদিনও দেখা গেল না। উল্টে ছুটির মেজাজে সময় কাটল তাঁদের।
এদিন সকালে স্টেশন মোড়, দিনবাজার, মাসকলাই বাড়ি সহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় পথসভা করে তৃণমূল এবং কংগ্রেস। একটু বেলা বাড়তে বামফ্রন্টের কর্মী সমর্থকরা পদযাত্রা বের করেন। ২০ নম্বর ওয়ার্ডে ঢাক বাজিয়ে প্রচার সারেন নির্দল প্রার্থী পল্লব দাস। তৃণমূল প্রার্থীর সমর্থনে টোটো গাড়ির মিছিল বের হয়। টোটোতে চেপে শহর পরিক্রমা করে দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে ভোট প্রার্থনা করেন আলিপুরদুয়ারের কংগ্রেস বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায়। তাঁর সঙ্গে ছিলেন পুরসভার প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান পিনাকী সেনগুপ্ত সহ শতাধিক দলীয় কর্মী সমর্থক। ৩ নম্বর ওয়ার্ডে বস্তি এলাকায় প্রচারে যান প্রবীণ তৃণমূল নেতা কৃষ্ণকুমার কল্যাণী। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে হাতের কাছে পেয়ে এলাকার সমস্যা তুলে ধরেন। কৃষ্ণকুমারবাবু বলেন, “বেহাল রাস্তা ঘাট। মানুষ প্রশ্ন তুলেছে। বাধ্য হয়ে বলতে হল ১৯৯৫ সালের আগে বামফ্রন্ট এবং তারপর থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত কংগ্রেস পুরসভায় ক্ষমতায় ছিল। ওঁরা কাজ করেননি। তাই এমন পরিস্থিতি।”
যদিও এদিন বিরোধীদের কেউ চুপ ছিলেন না। কংগ্রেস নেতৃত্ব প্রচারে তুলে আনেন, কী ভাবে তাঁদেরল কাউন্সিলরদের ভাঙিয়ে বোর্ড দখল করেছে তৃণমূল। জেলা কংগ্রেস সভাপতি নির্মল ঘোষ দস্তিদার, কংগ্রেস বিধায়ক সুখবিলাস বর্মা পথসভায় দাবি করেন শহরের উন্নয়ন যতটুকু হয়েছে, সেটা তাঁদের বোর্ডের নেতৃত্বে। বামফ্রন্ট নেতৃত্ব তৃণমূল, কংগ্রেস এবং বিজেপিকে আক্রমণ করে প্রচারে ঝাঁপিয়েছেন। এদিন প্রবীণ সিপিএম নেতা মানিক সান্যাল, দলের জেলা সম্পাদক সলিল আচার্য, মেখলিগঞ্জের ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক পরেশ অধিকারী, আরএসপি নেতা বরুণ সরকার বাম প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচারে নামেন।
কয়েকটি ওয়ার্ডে বিজেপি কর্মী সমর্থকরা পদযাত্রা করেন। দলের জেলা সম্পাদক বাপি গোস্বামী, দলের জেলা যুব মোর্চা সভাপতি জয়ন্ত চক্রবর্তী ৪, ৫, ১৪ এবং ২০ নম্বর ওয়ার্ডে পথসভা করেন। এদিন সকাল থেকে বেলা ১২ টা পর্যন্ত শহর জুড়ে প্রচারের ঝড় বয়েছে। ফের বিকেল ৩ টার পর থেকে রাস্তায় নামেন রাজনৈতিক দলের কর্মীরা।
তবে সন্ধ্যায় শহরের চেহারা কিছু বদলে যায়। প্রচণ্ড গরমের পরে শহরের মানুষ তখন আর রাজনীতির তরজা নিয়ে উৎসাহ দেখাননি। আইপিএলের খেলাও তাঁদের ঘরে বেঁধে রেখেছে। তাই সুনসান হয়ে যায় অনেক রাস্তার মোড়। তবে তার মধ্যেই সামান্য কয়েকজন কর্মী সমর্থকের সামনে কোনও দলের নেতা বক্তব্য রাখছেন, এমনটা দেখা গিয়েছে শহরের বিভিন্ন মোড়ে।