এই দেশলাই ঘিরেই বিতর্ক। —নিজস্ব চিত্র।
দেশলাই বাক্সের উপরে স্টিকারে প্রার্থীর ছবি, নাম ও দলের প্রতীক চিহ্ন। আর ওই দেশলাই বাক্সই প্রচারের সময় বাড়ি বাড়ি বিলি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। মালদহের মালতীপুর আসনের তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে তাই নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে।
আরএসপির অভিযোগ, মালতীপুরে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচারের সময় তাঁদের একটি করে দেশলাই বাক্স দিচ্ছে তৃণমূল। দেশলাইয়ের উপরে স্টিকারে রয়েছে প্রার্থী মোয়াজ্জেম হোসেনের নাম, ছবি, ও দলের প্রতীক। শুধু বাড়িতেই নয়। পথেঘাটে প্রচারের সময়েও প্রার্থীর নাম ও প্রতীক মনে রাখতে সুবিধে হবে বলে বাসিন্দাদের দেশলাই বাক্স দেওয়া হচ্ছে। যা নির্বাচনী বিধিভঙ্গের সামিল বলেই দাবি আরএসপির। তাই নির্বাচন কমিশনে নালিশও ঠুকেছেন তাঁরা। পাশাপাশি কংগ্রেস প্রার্থী আলবেরুনী জুলকারনাইনের বিরুদ্ধেও বিধিভঙ্গের অভিযোগে কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। মন্দিরের দেওয়ালে লিখে কংগ্রেস প্রচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ।
তৃণমূল অবশ্য বিধিভঙ্গের অভিযোগ মানতে চায়নি। উল্টে বিরোধীরাই দুর্নাম করতে এসব করছেন বলে পাল্টা অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। মালতীপুরের তৃণমূল প্রার্থী মোয়াজ্জেম হোসেন দাবি করেন, ‘‘ওই দেশলাই বাক্সের সঙ্গে আমার বা দলের কোনও সম্পর্ক নেই। প্রচারের এত কিছু থাকতে দেশলাই বাক্স দিতে যাব কেন? বিষয়টি আমি নির্বাচন কমিশনের নজরে এনেছি।’’
আর কংগ্রেস প্রার্থী আলবেরুনি জুলকারনাইনেরও অভিযোগ, ‘‘সরকারি দেওয়ালের পাশাপাশি মন্দির, মসজিদের দেওয়াল যে লেখা যায় না তা কি আমরা জানি না। চক্রান্ত করেই বিরোধীরা এসব করছে বলে মনে হচ্ছে।’’
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, মন্দির, মসজিদের দেওয়াল যে প্রচারের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না তা রাজনৈতিক দলগুলোর সভাতেই স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দেশলাই বিলি প্রসঙ্গে কমিশনের অভিমত, ভোটারদের মধ্যে দেশলাই বিলি করা হলে তা বিধিভঙ্গের মধ্যেই পড়ে। দেশলাইয়ের দাম যাই হোক না কেন, তা ভোটারদের কাছে লাভজনক। অভিযোগ প্রমাণ হলে তা প্রার্থীর খরচের তালিকায় ঢুকে যাবে।
চাঁচলের মহকুমাশাসক তথা রিটার্নিং অফিসার পুষ্পক রায় বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। দু’টি ক্ষেত্রেই নির্বাচন কমিশনের তরফে সব খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মালদহে ১২টি আসনের মধ্যে যে দু’টি আসনে বাম-কংগ্রেস জোট হয়নি তার মধ্যে রয়েছে মালতীপুরও। পাশের বিধানসভা চাঁচলে বাম-কংগ্রেস জোট হয়েছে। জোটের প্রচারও চলছে। কিন্তু মালতীপুরে কংগ্রেস ও আরএসপি কোনও পক্ষই কাউকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে রাজি নয়। আবার জোট না হওয়ায় বাড়তি অক্সিজেন পেয়ে গিয়ে জোরদার লড়াইয়ে তৃণমূলও। তাই মনোনয়নের দিন থেকেই যে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের পর্ব শুরু হয়েছে, তা নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসবে ততই বাড়বে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।