—প্রতীকী চিত্র।
উত্তর দিনাজপুরে এ বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ছাত্রদের থেকে প্রায় ১৭ শতাংশ বেশি ছাত্রী পাশ করেছেন। উচ্চ মাধ্যমিকে ছাত্রদের থেকে হাজার পাঁচেক বেশি ছাত্রী পরীক্ষা দেন। এই পরিস্থিতিতে পাশের হারের নিরিখে ছাত্রদের পিছিয়ে পড়ার কারণ খুঁজতে আসরে নেমেছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। ছাত্রদের পিছিয়ে পড়ার কারণ হিসাবে জেলার শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আলোচনায় নানা মত উঠে এসেছে।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ নিযুক্ত জেলার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা পরিচালন কমিটির আহ্বায়ক সুব্রত সাহা বলেন, ‘‘উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশের হারের নিরিখে কেনও ছাত্ররা পিছিয়ে পড়লেন, তা জানতে সংসদের তরফে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে জেলার বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের সঙ্গে কথা বলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
সংসদ সূত্রের খবর, এ বছর জেলায় উচ্চ মাধ্যমিকে সার্বিক পাশের হার ৮৬.৬০ শতাংশ। ৮,৫৭১ জন ছাত্র ও ১৩,২১৩ জন ছাত্রী পরীক্ষায় বসেন। তাঁদের মধ্যে ৭,৮৩৫ জন ছাত্র ও ১১,০৩১ জন ছাত্রী পাশ করেন। ছাত্রদের পাশের হার ৪১.৫৩ ও ছাত্রীদের পাশের হার ৫৮.৪৭ শতাংশ।
ছাত্রদের পিছিয়ে পড়ার কারণ হিসাবে হেমতাবাদ হাই স্কুলের শিক্ষক দীপাঞ্জন সরকারের বক্তব্য, মূলত, জেলার গ্রামাঞ্চলের স্কুলগুলির ছাত্রদের একাংশ এ বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করতে পারেননি। দীপাঞ্জন বলেন, ‘‘করোনা-আবহ থেকে জেলার গ্রামীণ এলাকার বহু পরিবারে রোজগার কমেছে। সেই থেকে অনেক পরিবারের ছাত্ররা সংসারের হাল ধরতে পরিবারের লোকেদের সঙ্গে ভিন্-রাজ্যে গিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজে যোগ দিয়েছেন। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার আগে, বাড়ি ফিরে তাঁরা পরীক্ষায় বসেন। কিন্তু ঠিক মতো পড়াশোনা না করার কারণে, এ বছর উচ্চ মাধ্যমিকে জেলায় ছাত্রদের ফল খারাপ হয়ে থাকতে পারে। তবে গোটা বিষয়টা সরকারি ভাবে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’’ রায়গঞ্জ মোহনবাটী হাই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক অমল বিশ্বাস ও রায়গঞ্জের হাতিয়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অনিরুদ্ধ সিংহের দাবি, করোনা-আবহের পর থেকে স্কুলের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির অনেক ছাত্র ভিন্-রাজ্যে কাজে চলে যান। স্কুলের তরফে অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁদের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসানো হয়। সে সব ছাত্রের পড়াশোনায় খামতি ছিল বলে, চূড়ান্ত পরীক্ষায় কৃতকার্য হননি অনেকেই।