ফাইল চিত্র।
প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির প্রেক্ষিতে এ বার শিলিগুড়ির প্রাথমিক স্কুলের এক শিক্ষক নেতা, স্থানীয় এক তৃণমূল নেতা এবং প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনে রাজ্যের শীর্ষস্থানীয় এক নেতার রাশিয়া সফর নিয়ে হইচই শুরু পড়ে গিয়েছে।
কয়েক মাস আগে পার্থ-ঘনিষ্ঠ তিন নেতার ওই সফর ঘিরে নানা প্রশ্ন উঠছে এখন তৃণমূলের অন্দরেই। মাথা পিছু লক্ষাধিক টাকা খরচ করে তিনজন রাশিয়া ঘুরতে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। একই সঙ্গে, ওই তিন নেতার হাত ধরে কেউ মোটা টাকার বিনিময়ে চাকরি পেয়েছেন কি না তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে বিভিন্ন মহলে।
রাশিয়া ঘুরতে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে ওই তিন নেতার দাবি, ব্যক্তিগত জমানো টাকা খরচ করেই তাঁরা ঘুরতে গিয়েছিলেন। দলের তরফেও এই বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর শুরু হয়েছে। দলেরই একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই শিক্ষক নেতা দলীয় নেতৃত্বের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে বিভিন্ন জায়গায় জানিয়েছেন তাঁদের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ বলেন, ‘‘বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নেব। তাঁরা কী ভাবে, কার সঙ্গে কবে গিয়েছেন সে সব না জেনে কিছু বলা ঠিক নয়। খোঁজখবর নিয়েই বিস্তারিত বলা সম্ভব।’’
শিলিগুড়িতে প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের জেলার শীর্ষে থাকা ওই নেতা আগে শিলিগুড়ি পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে থাকতেন। বর্তমানে তিনি বাগডোগরায় থাকেন। তিনি বলেছেন, ‘‘কোভিড পরিস্থিতিতে উড়ানের ভাড়া তলানিতে নেমে যায়। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আমরা বিদেশ ভ্রমণের পরিকল্পনা নিয়েছিলাম একটি সস্থার মাধ্যমে। মাথাপিছু ৯০ হাজার টাকা খরচ লেগেছে। তবে এর সঙ্গে অন্য কোনও বিষয় জড়িয়ে কিছু বলা অন্যায়।’’
ওই তিনজন পার্থ-ঘনিষ্ঠ হওয়ার বিষয়টি অবশ্য স্বীকার করেছেন জেলার নেতাদের অনেকেই। প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের তৃণমূল নেতা দলের মধ্যে বিক্ষুব্ধ বলে পরিচিত। রবীন্দ্রনগর এলাকায় থাকেন। তিনি বলেন, ‘‘জমানো টাকা খরচ করেই ঘুরতে গিয়েছিলাম। বিমানের ভাড়া অনেক কম ছিল বলে সেই মতো যাওয়া হয়। অন্য সময় যাওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তবে সেটাকেই হাতিয়ার করে শত্রপক্ষ নানা কিছু বলার চেষ্টা করছে, যা পুরোটাই মিথ্যে।’’ তাঁর দাবি, এক সময় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ থাকলেও তিনি শিক্ষামন্ত্রী হওয়ার পর যোগাযোগ তেমন ছিল না। কলকাতার শিক্ষক নেতা অবশ্য পার্থ’র অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। পার্থ গ্রেফতার হতেই তাই শিলিগুড়ি এই দুই নেতার সঙ্গে কলকাতার ওই শিক্ষক নেতার যোগাযোগ এবং এক সঙ্গে তাঁদের রাশিয়া সফর নিয়ে তাই নানা রকম সন্দেহ প্রকাশ করছেন অনেকেই।