উত্তরবঙ্গে পাহাড় এবং সমতল বৃষ্টি-ধসে বিপর্যস্ত। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
ধস আর বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গের পাহাড় থেকে সমতল। গত দু’দিন ধরে টানা বৃষ্টিতে জল বাড়তে শুরু করেছে তিস্তার। সিকিমেও ভারী বর্ষণ চলছে। ফলে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে উঠেছে। দু’দিনের ভারী বর্ষায় ফুঁসছে তিস্তা-সহ অন্যান্য নদী। তাই নিচু এলাকা এবং নদীপারের বাসিন্দাদের আগে থেকেই সতর্ক করা হচ্ছে প্রশাসনের তরফে। মাইকেও প্রচার চালানো হচ্ছে।
সিকিম-সহ উত্তরের সমতলে চলছে লাগাতার বৃষ্টি হচ্ছে। শুক্রবার রাতে দ্রুত গতিতে জল বাড়তে থাকে তিস্তা নদীতে। তার মধ্যেই দফায় দফায় তিস্তা ব্যারাজ থেকে জল ছাড়তে হচ্ছে। আর তার জেরেই তিস্তা নদীর পারের জনপদে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। তাই শুক্রবার রাত থেকেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে টাকিমারি, মালবাজার সাব ডিভিশনের বিভিন্ন এলাকা-সহ জলপাইগুড়ি পুরসভার ২ এবং ৩ নম্বর ওয়ার্ডের তিস্তা পারের বাসিন্দাদের সতর্ক করে মাইকে প্রচার করা হচ্ছে।
পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে শুক্রবার রাতেই জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বোয়ালমারি, নন্দনপুর গ্রামে যান মহকুমা শাসক-সহ অন্য আধিকারিকেরা। জলমগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের খোঁজখবর নেন তাঁরা। অন্য দিকে, পাহাড়ে ভারী বৃষ্টির জেরে ডুয়ার্সের বিভিন্ন নদী এবং পাহাড়ি ঝোরাগুলিতে জলের স্রোত বাড়ছে। তার জেরে হড়পা বানেরও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
সারা রাত ধরে বৃষ্টির কারণে পাহাড়ের একাধিক জায়গায় নতুন করে ধস নামে। কালিম্পংয়ের মেল্লিতে ধস নেমে রাস্তা অবরুদ্ধ। অন্য দিকে, দার্জিলিং জেলার চিত্রেতে নতুন করে ধস নেমেছে। কালিম্পং জেলা প্রশাসন থেকে নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়েছে, আপাতত ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ থাকবে। বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পূর্ত দফতর। তাদের নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত জাতীয় সড়ক ১০ বন্ধ থাকছে। অন্য দিকে, গরুবাথান থেকে লাভা হয়ে যে বিকল্প রাস্তা ব্যবহারের যোগ্য ছিল, সেটিও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। খুব প্রয়োজন না থাকলে সেই রাস্তা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে জেলা প্রশাসন।
শনিবার দার্জিলিং, কালিম্পং এবং জলপাইগুড়িতে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। বৃষ্টি হতে পারে ৭ থেকে ১১ সেন্টিমিটার। ভারী বৃষ্টির কারণে উত্তরবঙ্গে বিপর্যয়ের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আবহবিদেরা জানিয়েছেন, বৃষ্টিতে পাহাড়ে ধস নামতে পারে। বাড়তে পারে বিভিন্ন নদীর জলস্তর। চাষেরও ক্ষতি হতে পারে। আগে থেকে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।