দেহ নিয়ে পরিবারে সদস্যরা। নিজস্ব চিত্র
চিকিৎসায় গাফিলতিতে চার দিনের এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল। বুধবার দুপুরে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। অভিযুক্ত চিকিৎসক ও নার্সদের শাস্তির দাবিতে হাসপাতাল চত্বরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন মৃত ওই সদ্যোজাতের পরিবারের লোকেরা। হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিশুটির দেহ কোলে নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরে তাঁরা হাসপাতালের সহকারী সুপার বিপ্লব হালদারের সঙ্গে দেখা করে মৌখিক ভাবে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ জানান। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে তাঁরা ওই সদ্যোজাতের মৃতদেহ নিয়ে বাড়ি ফিরে যান।
বিপ্লব বলেন, “মৃত শিশুর পরিবারের লোকেদের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ জানাতে বলা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে ঘটনার তদন্ত করে আইনানুগ পদক্ষেপ করবেন।”
মৃত শিশুটির মায়ের নাম অঞ্জুরা খাতুন। তাঁর বাপের বাড়ি রায়গঞ্জের ঋষিপুরে। শ্বশুরবাড়ি কালিয়াগঞ্জের ফুলটি এলাকায়। অঞ্জুরার স্বামী মোমিনুল হক দিনমজুর। মোমিনুল জানিয়েছেন, গত রবিবার সকালে বাপের বাড়িতে আচমকা প্রসব বেদনা শুরু হয় অঞ্জুরার। কিন্তু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই তিনি বাড়িতে পুত্রসন্তান প্রসব করেন। কিন্তু প্রসবের পরে ওই সদ্যোজাত মায়ের দুধ খাচ্ছিল না। পরিবারের লোকেরা সঙ্গে সঙ্গে অঞ্জুরা ও তাঁর সদ্যোজাত পুত্রসন্তানকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। মঙ্গলবার বিকালে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অঞ্জুরা ও তাঁর পুত্রসন্তানকে ছুটি দিয়ে দেন। বাপের বাড়ির লোকেরা অঞ্জুরা ও তাঁর পুত্রসন্তানকে বাড়িতে নিয়ে যান। বুধবার সকালে ফের ওই শিশুটি মায়ের দুধ খাওয়া বন্ধ করে দেয়।
মোমিনুল বলেন, “এই পরিস্থিতিতে ছেলেকে ফের হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করি। কিন্তু ভর্তির কিছুক্ষণ পরে ওর মৃত্যু হয়। হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা সুস্থ হওয়ার আগেই মঙ্গলবার ছেলেকে বাড়িতে নিয়ে যেতে বলেছিলেন। এ দিন সকালে ছেলেকে ফের হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরে চিকিৎসক ও নার্সরা সঙ্গে সঙ্গে তাকে দেখেননি। চিকিৎসায় গাফিলতিতেই আমার ছেলের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি দাবি করেছি।’’