গত অক্টোবর মাসে সরকারিভাবে জমি হস্তান্তরের ঘোষণা হয়েছিল। কিন্তু এখনও জমি জটেই আটকে রয়েছে বাগডোগরা বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ ও আধুনিকীকরণ প্রকল্প। সরকারি সূত্রের খবর, বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনাল, রানওয়ের-সহ সার্বিক পরিকাঠামোর জন্য চিহ্নিত করা হয়েছিল ১০৫ একর জমি। চা বাগানের জমি মিলিয়ে ওই জমির হস্তান্তরের নথিপত্র তৈরি করার সময়ে দেখা যায়, জমিটির একেবারে মধ্যে ৫.৯ একর বায়ু নার জমি। যা হস্তান্তরের ছাড়পত্র এখনও মেলেনি। আর এই জটেই আটকে গিয়েছে প্রকল্প।
দার্জিলিং জেলা প্রশাসন এবং সরকারের তরফে ওই অংশটি ছেড়ে বাকি জমি নিয়ে নেওয়ার জন্য এয়ারপোর্ট অথারিটি অব ইন্ডিয়াকে (এআইআই) জানানো হয়। কিন্তু ওই জমিটি একেবারে মাঝের দিকে থাকায় সম্প্রসারণের নকশা মেনে কাজের অসুবিধা হবে বলে তা নিতে রাজি নন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ৷ এই অবস্থায় রাজ্য এখন কথা বলা শুরু করেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সঙ্গে। সরকারি নিয়মে বায়ুসেনার কাছ থেকে ওই জমি নিয়ে রাজ্যকেই তা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিতে হবে। তা আপাতত কবে হবে এখনও স্পষ্ট নয়।
বাগডোগরা বিমানবন্দরের অধিকর্তা সুব্রমণী পি বলেন, ‘‘বায়ুসেনার জমির ছাড়পত্র রাজ্যের কাছে না থাকায় গোটা প্রক্রিয়াটি থমকে রয়েছে। আশা করি, প্রতিবারের মতো এবারও দ্রুত জট খুলবে।’’
কয়েক বছর আগে বাগডোগরায় নাইট ল্যান্ডিং ব্যবস্থা চালুর জন্য রাজ্য এএআইকে ২৩ একর জমি দেয়। সেখানে ক্যাট-২ ইনস্ট্রুমেন্টাল ল্যান্ডিং সিস্টেম বসানো হয়। ওই জমির একটা অংশ বায়ুসেনার ছিল। তাঁরা তা দিয়েছিলেন। বাগডোগরা বিমানবন্দর একটি সামরিক বিমানবন্দর। এর এটিসি এবং রানওয়ে বায়ুসেনা নিয়ন্ত্রণ করে। বিমানবন্দর চালু থাকার সময়সীমাও গত দুই বছর আগে বায়ুসেনা বাড়িয়ে ভোর ৫টা থেকে রাত অবধি করে দেওয়ায় ভোরের এবং সন্ধ্যায় বিমান চালু হয়। তাতে বিমানবন্দরে চাপ বাড়তে থাকে। ঘন্টায় ৭০০-৮০০ যাত্রী ধারণের ক্ষমতা সম্পন্ন বিমানবন্দরের টার্মিনালে ঘন্টায় ৩-৩.৫ হাজার লোক হচ্ছিল। পরপর বিমানের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। তাতে বিমানবন্দর সম্প্রসারণ করা ছাড়া উপায় ছিল না। ২০১৯ সালেই বাগডোগরা যাত্রী সংখ্যা বছরে ৩০ লক্ষ পার হয়ে যায়। সেই সময়ে সম্প্রসারণের জন্যে রাজ্যের হাতে জমি না থাকায় বাগানের জমি বাছাই করা হয়। তাই নিয়ে জট কাটানোর পরেও এখন দেখা যাচ্ছে, সেই জমির ভিতরে বায়ুসেনার জমি পড়েছে।
প্রশাসনের অফিসারেরা জানান, বাগডোগরা বিমানবন্দরের যখন যা প্রয়োজন হয়েছে, বায়ুসেনা করেছে। কিন্তু তাঁদের একটি সরকারি প্রক্রিয়া রয়েছে। দিল্লি, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ছাড়পত্র এ ক্ষেত্রে প্রয়োজন। তা মিললে বাগডোগরার জমি জট কাটবে। তবে ছাড়পত্রের বিষয়টি আরও আগে থেকে দেখা হলে ভাল হত। আপাতত আরও কিছু দিন নতুন কাজের জন্য অনুমোদন করা টাকা নিয়ে এএআই কর্তৃপক্ষকে বসে থাকতে হবে।