—প্রতীকী চিত্র।
মালদহ সফরে এসে দলের দ্বন্দ্ব মেটাতে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নেতাদের কয়েক জনকে মুখ্যমন্ত্রীর ধমকও খেতে হয়।
৭২ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই ফের পুরনো ছবিই ফিরল চাঁচলের মালতীপুরে। স্থানীয় সূত্রে খবর, ‘বাংলার গর্ব মমতা’ কর্মসূচি ঘিরে ফের প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’। দলের অন্দরমহলের খবর, নতুন কর্মসূচির প্রথম দিনই ওই বিধানসভা এলাকায় এমন ‘দ্বন্দ্বে’ কর্মীদের পাশাপাশি উদ্বিগ্ন নেতৃত্বও।
দলীয় সূত্রে খবর, ওই বিধানসভা এলাকায় দলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে প্রাক্তন বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সিকে। এ দিন কর্মসূচির শুরুর আগেই তিনি ‘বহিরাগত’ বলে দাবি তুলে হইচই শুরু করেন নেতা-কর্মীদের একাংশ। তাঁকে দায়িত্ব থেকে সরানোর দাবিতে বিক্ষোভ হয়। অভিযোগ, ওই সময় কর্মীদের অনেকেই লাঠি হাতে একে অন্যের দিকে তেড়ে যান। কর্মসূচি ভন্ডুল হওয়ার উপক্রম দেখে হস্তক্ষেপ করেন জেলা তৃণমূল সভানেত্রী মৌসম নুর। তার পরে অবশ্য সভা হয়। তবে সেখান থেকে রহিম বক্সির ছবি সরিয়ে দেওয়া হয়।
মৌসম এ দিন সন্ধ্যায় বলেন, ‘‘মালতীপুরে কর্মসূচি ঘিরে একটা সমস্যা হয়েছিল। তবে পরে তা হয়েছে। বাংলার গর্ব মমতা কর্মসূচির দায়িত্ব আমি দিইনি। কাউকে সরানোর ক্ষমতাও আমার নেই। তবে এ দিনের বিষয়টি নেতৃত্বকে জানাব।’’
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মালতীপুর বিধানসভা থেকে আরএসপির বিধায়ক ছিলেন আব্দুর রহিম বক্সি। মাসকয়েক আগে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। নেতাদের একাংশের অভিযোগ, তাঁর সঙ্গে বিরোধ রয়েছে চাঁচল-২ ব্লকের কার্য়করী সভাপতি ইমদাদুল হকের। ইমদাদুলও এক সময় সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, মালতীপুর বিধানসভা এলাকায় ‘বাংলার গর্ব মমতা’ কর্মসূচির দায়িত্ব আব্দুর রহিম বক্সিকে দেওয়ার পরেই সেখানে দ্বন্দ্বের চোরাস্রোত বইতে শুরু করে। যা এ দিন প্রকাশ্যে এল।
দলীয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মালতীপুর বিধানসভার কালীগঞ্জ এলাকায় এ দিন ওই কর্মসূচির জন্য সভা ডাকা হয়। সেখানে জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ রফিকুল হোসেন, পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সামসুল হক, ব্লক সভাপতি হবিবুর রহমান, কার্যকরী সভাপতি ইমদাদুল হক উপস্থিত ছিলেন। শুরুর আগেই তুমুল গণ্ডগোলে সভা ভণ্ডুল হওয়ার উপক্রম হয়। মৌসমের আশ্বাসে সভার কাজ শেষ হলেও এ দিনের ঘটনার পরে সেখানে ওই কর্মসূচির কী হবে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন নেতৃত্ব।
ইমদাদুল এদিন বলেন, ‘‘এখানকার স্থানীয় কর্মীরা বাইরের কোনও নেতার কর্মসূচিতে নাক গলানো মেনে নেবেন না। রহিম বক্সি এখানকার ভোটার নন। এলাকার কাউকে দায়িত্ব দিতে হবে বলেই দাবি রয়েছে স্থানীয় কর্মীদের।’’
আব্দুর রহিম বক্সি অবশ্য গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা মানতে চাননি। তার দাবি, ‘‘বসার জায়গা নিয়ে একটা সমস্যা হয়েছিল। দল আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছে তা আমি পালন করতে বাধ্য।’’