প্রতীকী ছবি
বছর দেড়েক আগের ঘটনা। প্রকাশ্যে রাস্তায় টিএমসিপি-র কোচবিহার কলেজ ইউনিটের আহ্বায়ক মাজিদ আনসারিকে গুলি করা হয়। দুই সপ্তাহের মাথায় বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় মাজিদের। তাঁর দাদা সাজিদ আনসারিকে এ বারে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হল। শনিবার রাতেই ওই ঘোষণা করা হয়।
মাজিদকে খুনের অভিযোগে টিএমসিপির একটি গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত ছ’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সে সব সময় তা নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিলেন সাজিদ। তার পরেও দলের ছাত্র সংগঠন থেকে পিছিয়ে যাননি তিনি। সম্প্রতি কলকাতায় টিএমসিপির ধর্নামঞ্চেও বক্তব্য দিতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। সংগঠনের দায়িত্ব পাওয়ার পরে স্বাভাবিক ভাবেই কিছুটা স্মৃতির মধ্যে ডুবে গিয়েছিলেন সাজিদ। তিনি বলেন, “ভাই থাকলে অনেক ভাল হত। আমরা তো দু’জনেই একসঙ্গে টিএমসিপি করতাম। ভাইয়ের কথা মনে রেখেই সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করার চেষ্টা করব।”
এ বারের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের হাত থকে কোচবিহার আসন ছিনিয়ে নেয় বিজেপি। তার পর থেকে বিজেপির সঙ্গে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের সংগঠনও শক্তিশালী হতে শুরু করে। একাধিক কলেজে কোণঠাসা হয়ে পড়ে টিএমসিপি। এমন অবস্থায়, ছাত্র সংগঠন নতুন করে সাজিয়ে তুলতে শুরু করেছে টিএমসিপি। ১৩ জনকে নিয়ে কোচবিহার জেলা কমিটি ছিল টিএমসিপির।
এ বারে আরও ১২ জনকে জেলা সংগঠনের দায়িত্বে আনা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৭ জন জেলার সাধারণ সম্পাদক এবং ৫ জনকে সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে সাজিদ ছাড়াও আয়ূব হোসেন, অনির্বাণ কর, কৌশিক অধিকারী, আইজুল ইসলাম, পিন্টু বর্মণ-সহ আরও কয়েক জনের নাম রয়েছে।
টিএমসিপির কোচবিহার জেলার সভাপতি নরেন দত্ত বলেন, “সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে কমিটি বড় করা হল। বর্তমানে ২৫ জনের কমিটি হল। তা বাড়িয়ে ৩০ জনের করা হবে।”
সাজিদে’র বাড়ি কোচবিহারের রেলঘুমটি এলাকায়। কোচবিহার কলেজের ছাত্র সাজিদ স্কুল পাশ করার পর থেকেই টিএমসিপি’র দিকে ঝুঁকে পড়েন। দু’বছর আগে কলেজ ছাড়লেও সংগঠনের কাজ চালিয়ে যান। কোচবিহারের শহরের মধ্যে থাকা এবিএনশীল কলেজের পাশাপাশি কোচবিহার কলেজেও বর্তমানে অনেকটাই শক্তিশালী এবিভিপি। টিএমসিপির সংগঠন অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে।
এই অবস্থার পরিবর্তন করাই এখন সাজিদদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। সাজিদ বলেন, “ছাত্রছাত্রীরা আমাদের সঙ্গেই আছে। তাই সংগঠন শক্তিশালী করতে খুব একটা সময় লাগবে না।”
যদিও এবিভিপির দাবি, টিএমসিপির উপরে ছাত্রছাত্রীদের আর ভরসা নেই। জোর করে কিছু কলেজ দখল রাখার চেষ্টা করছে তারা। তা কাজে লাগবে না।