স্বপ্ন ছুঁয়ে ষেন ঘোর কাটছে না তিন কৃতীর

মাধ্যমিকে ওরা তিনজনই ভাল ফলের আশা করেছিল। কিন্তু সেই ভাল ফল যে ওদের একেবারে মেধাতালিকায় জায়গা করে দেবে সেটা তারা স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৬ ০২:১৭
Share:

মায়ের সঙ্গে অন্বেষা। নিজস্ব চিত্র।

মাধ্যমিকে ওরা তিনজনই ভাল ফলের আশা করেছিল। কিন্তু সেই ভাল ফল যে ওদের একেবারে মেধাতালিকায় জায়গা করে দেবে সেটা তারা স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেনি। তাই মঙ্গলবার মাধ্যমিকের মার্কশিট হাতে পাওয়ার পরেও কিছুক্ষণ ঘোরই কাটেনি রায়গঞ্জ গার্লস ও করোনেশন হাইস্কুলের তিন কৃতী পড়ুয়া অন্বেষা মিত্র, তনুমিতা রায় ও তুহিন রায়ের।

Advertisement

রায়গঞ্জ গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী তথা শহরের মধ্য মোহনবাটি এলাকার বাসিন্দা অন্বেষা মাধ্যমিকে ৬৭৯ নম্বর পেয়ে রাজ্যে পঞ্চম স্থান দখল করেছে। ওই স্কুলেরই আরেক ছাত্রী শহরের উকিলপাড়া এলাকার বাসিন্দা তনুমিতা রায় ৬৭৪ নম্বর পেয়ে রাজ্যে দশম স্থান দশম স্থান অধিকার করে নিয়েছে। একই নম্বর পেয়ে দশম স্থানে রয়েছে রায়গঞ্জ করোনেশন হাইস্কুলের কৃতি ছাত্র তথা শহরের পূর্ব নেতাজিপল্লি এলাকার বাসিন্দা তুহিন রায়।

অন্বেষার কথায়, ‘‘ভাল ফল করব আশা করেছিলাম। কিন্তু রাজ্যে পঞ্চম স্থান দখল করব সেটা কোনওদিনও ভাবিনি।’’

Advertisement

তনুমিতা ও তুহিনের কথায়, ‘‘আমাদেরও ভাল ফলের প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু একেবারে দশম স্থান অধিকার করতে পারব তা কল্পনা করতে পারিনি। মার্কশিট হাতে পাওয়ার পরেও যেনও কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছিল না।’’

অন্বেষা বাংলায় ৯৬, ইংরেজিতে ৯১, অঙ্কে ৯৯, পদার্থবিদ্যায় ১০০, জীবনবিজ্ঞানে ৯৭, ইতিহাসে ৯৬ ও ভুগোলে ১০০ নম্বর পেয়েছে। তার বাবা দেবাশিসবাবু রায়গঞ্জ করোনেশন হাইস্কুলের পদার্থবিদ্যার শিক্ষক। মাধ্যমিকে সব বিষয়েই অন্বেষার গৃহশিক্ষক থাকলেও বাড়িতে তার মা গৃহবধূ পারমিতাদেবী তাকে নিয়মিত পড়াতেন। অন্বেষা বরাবরই গভীর রাত পর্যন্ত পড়াশোনা করতে ভালোবাসে। ফলে সকালে একটু দেরিতে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস তার। অবসর সময়ে সুচিত্রা ভট্টাচার্য ও হুমায়ন আহমেদের লেখা গল্প পড়তে ভালবাসে সে। তার কথায়, ‘‘ভবিষ্যতে চিকিত্সক হতে চাই। নিখরচায় গরিবদের চিকিত্সা করতে পারবো। তাই বিজ্ঞান নিয়ে উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তি হব।’’

তনুমিতা বাংলা ও ইংরেজিতে ৯৪, অঙ্কে ৯৯, ইতিহাসে ৯০, ভুগোলে ১০০, জীবনবিজ্ঞানে ৯৭ ও পদার্থবিদ্যায় ১০০ নম্বর পেয়েছে। তনুমিতারও সব বিষয়ে গৃহশিক্ষক থাকলেও তার পড়াশোনার ক্ষেত্রেও অবসর সময়ে নজরদারি করতেন তার মা পেশায় অঙ্গনওয়াড়ির সুপারভাইজার অনিতাদেবী। অনিতাদেবীর স্বামী তমালকৃষ্ণবাবু কালিয়াগঞ্জ পুরসভায় কর্মরত। তনুমিতা জানায়, সে কখনওই ঘড়ি ধরে পড়াশোনা করত না। তবে দিনে দফায় দফায় চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা পড়ত। অবসর সময়ে গান শুনত। ভবিষ্যতে কলেজের শিক্ষিকা হওয়ার ইচ্ছে তার।

অন্যদিকে, তুহিন বাংলায় ৯০, ইংরেজিতে ৯৫, অঙ্কে ৯৯, পদার্থবিদ্যায় ১০০, জীবনবিজ্ঞানে ৯৯, ইতিহাসে ৯৩ ও ভুগোলে ৯৮ নম্বর পেয়েছে। মাধ্যমিকে তুহিনেরও সব বিষয়েরই গৃহশিক্ষক ছিল। তুহিনের বাবা তরুণবাবুর রায়গঞ্জের নিউমার্কেট এলাকায় স্টেশনারি সামগ্রীর দোকান রয়েছে। মা কবিতাদেবী গৃহবধূ। তুহিনও নিয়ম করে ঘড়ি ধরে পড়াশোনা করত না। তবে দিনে গড়ে ছ’ঘণ্টা পড়াশোনা করত সে। ছেলের পড়াশোনার ব্যাপারে কড়া নজর ছিল কবিতাদেবীর। তুহিনও বিজ্ঞান নিয়ে উচ্চমাধ্যমিকে পড়াশোনা করতে চায়। ভবিষ্যতে জ্যোতির্বিজ্ঞানী হওয়ার ইচ্ছে তুহিনের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement