পাশের রামচন্দ্রপুর এলাকার বাসিন্দারা ডায়েরিয়ায় ভুগছেন। কিন্তু হজরতপুর অঞ্চলের উপর কাদমা এবং তলা কাদমা দু’টি এলাকায় এ বার ডায়েরিয়া রোগ ছড়াতে পারেনি।
বাসিন্দারা প্রত্যেক বাড়িতে শৌচাগার তৈরি করে পানীয় জল ও খাবারে দূষণ অনেকটাই প্রতিরোধ করে তুলতে পেরেছেন। বর্ষার মরসুমে এখনও পর্যন্ত ওই এলাকায় কেউ ডায়েরিয়ার আক্রান্ত হননি। জানা গিয়েছে, ওই দু’টি এলাকার মোট ৬৭০টি পরিবারের মধ্যে হাতেগোনা কয়েকটি পরিবারের বাড়িতে পাকা শৌচাগার ছিল। মাত্র তিন মাসের মধ্যে পঞ্চায়েত, ব্লক প্রশাসন এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার যৌথ উদ্যোগে এলাকার সমস্ত পরিবার বাড়িতে পাকা শৌচাগার গড়ে নির্মল গ্রামের পথে হাঁটা শুরু করলেন।
রবিবার বিকেলে স্থানীয় কাদমা জুনিয়র হাইস্কুলের মাঠে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ওই দুই এলাকাকে সরকারিভাবে নির্মল গ্রাম ঘোষণা করা হয়। এই উপলক্ষে সরকারি ফলক উন্মোচন করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা। তিনি বলেন,‘‘শৌচাগার তৈরি করে নিয়মিত তা ব্যবহার না করলে পুরো রোগমুক্তি ঘটবে না।’’ অনুষ্ঠানে তপনের জয়েন্ট বিডিও বিশ্বজিত দত্ত পাশের রামচন্দ্রপুর অঞ্চলে সাম্প্রতিক ডায়েরিয়ায় দু’জনের মৃত্যু ও আক্রান্ত বাসিন্দাদের বিষয়টি তুলে ধরে শুধু নিজের এলাকা নয়, পাশের গ্রামগুলিতেও এ বিষয়ে সচেতনতার প্রচার চালিয়ে তাঁদের অভিজ্ঞতা পৌঁছে দেওয়ার জন্য কাদমাবাসীকে আহ্বান জানান।
প্রকল্পের জেলা আধিকারিক তথা এডিএম অগাস্টিন লেপচা বলেন, ‘‘হজরতপুর অঞ্চলের ১৭টি সংসদ এলাকায় ওডিএফ কর্মসূচির আওতায় আনতে কাজ শুরু হয়েছে। প্রতিটি বাড়িতে পাকা শৌচাগার তৈরি বাবদ ১০ হাজার টাকা সরকারি ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে। উপভোক্তার অংশ ৯০০ টাকা। এ দিন কাদমা এলাকার গৃহবধূ অঞ্জনা বর্মন, রোজিনা বিবি, পার্বতী কিস্কুরা বলেন, ‘‘বাড়িতে শৌচালয় ব্যবহার করে বাচ্চাদের পেটের অসুখও অনেক কম।’’ মিশন নির্মল বাংলা কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিনিধি রাজু দাসের কথায়, ‘‘প্রথমদিকে বাসিন্দারা পাকা শৌচাগার তৈরি নিয়ে সংশয়ে ছিলেন। লাগাতার প্রচার ও স্থানীয় মহিলাদের তৎপরতায় এক্ষেত্রে একশো শতাংশ নির্মল গ্রামে পরিণত হয়েছে।’’