—নিজস্ব চিত্র।
কেউ যাচ্ছেন চাঁদা তুলতে। কেউ বা ছুটছেন প্রতিমার বায়না করতে। অনেকের দায়িত্বে মণ্ডপসজ্জার কারিগর খোঁজা। দুর্গাপুজোর আয়োজনে পুরুষদের সাহায্য ছাড়াই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সব সামলাচ্ছেন ধূপগুড়ির হিন্দু-মুসলিম-হরিজন মহিলারা।
প্রতি বারের মতো এ বারও দুর্গাপুজোর আয়োজনে ব্যস্ত জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ির পপিয়া, ফিরোজা, রোজি, রেশমা, ডলিরা। ধূপগুড়ির ৩ নম্বর ওয়ার্ডের দরবেশ পাড়ার ৬০ জন মহিলাই গত ছ’বছর ধরে দুর্গাপুজোর আয়োজন করছেন। তাঁদের হাতে গড়া ‘সম্প্রীতি মহিলা দুর্গা পুজো কমিটি’-র নামে ছাপানো হয়ে গিয়েছে চাঁদা আদায়ের রসিদও। নিজেদের মধ্যে থেকেই বেছে নিয়েছেন সভানেত্রী, সম্পাদিকা বা কোষাধ্যক্ষও। পুজো কমিটির কোষাধ্যক্ষ ডলি দে বলেন, ‘‘ছ’বছর ধরে এ পুজোর আয়োজন করছি। করোনার আবহে আগের মতো পুজো করার উপায় নেই, তাই বাজেটেও কম। পাড়ার লোকজন যে যা চাঁদা দিচ্ছেন, তা দিয়েই পুজো করা হবে। মূলত সম্প্রীতির বার্তা দিতেই এ আয়োজন।’’
মহিলাদের এই উদ্যোগে পুরুষেরা শামিল না হলেও একে সাধুবাদ জানিয়েছেন। প্রয়োজনে পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাসও দিয়েছেন। মহিলাদের এই পুজো কমিটির সম্পাদিকা পপিয়া দে বলেন, ‘‘একই পাড়ায় হিন্দু- মুসলমান-হরিজন সকলেই একসঙ্গে রয়েছি। ধর্মীয় ভেদাভেদ ভুলে একসঙ্গে বসে দুর্গাপুজো করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। ইদে যেমন মুসলিম পড়শিদের বাড়িতে গিয়ে মিষ্টিমুখ করি, তেমনই তাঁরাও দুর্গাপুজোয় আমাদের পাশে থাকেন। সব ধর্মের মানুষ যে এক সুতোয় বাঁধা— এই পুজো থেকে এ বার্তাই দিতে চাই।’’
পুজো কমিটির সদস্যা ফিরোজা খান, রেশমা খাতুন বা রেশমি বেগমের কথাতেও একই সুর। তাঁরা বলেন, ‘‘ধর্মের দোহাই দিয়ে পুজোর সময় আলাদা থাকব কেন? তাই জোট বেঁধে পুজো করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। হিন্দু–মুসলিম বা হরিজন সম্প্রদায়ভুক্ত হলেও আমাদের মধ্যে ভেদাভেদ নেই।’’