ছোটবেলায় ঢাকের আওয়াজটা শুনলেই শরীরটা কেমন দুলতে শুরু করত। ষষ্ঠীর দিনটা শুরু হতো ঢাকের আওয়াজ দিয়েই। তা চলত দশমী পর্যন্ত। পুজোর দু-চার দিন আগেই স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে ঢাকিদের আনাগোনা শুরু হয়ে যেত। তাঁদের দেখতে হাজির হতাম। সেখানে ঢাকিদের বাজানোর উপরেই নির্ভর করত কোথায় বায়না পাবেন। এখন মোবাইলের আমলে সব তিছুই আগে থেকে টিক করা থাকে। স্টেশনে বসে থাকার সময় কোথায় ঢাকিদের।
নেট গাঁটলে কত রকমের ঢাকের আওয়াজ টের পাই। আওয়াজটাই হয়। অনুভূতিটা কিন্তু আগের মতো হয় না। আমার মনে হয়, ঢাকের পেছনের পালকের সাজ, দোলা, ঢাকির দুলতে থাকা, সব কিছু মিলিয়েই তৈরি হয় ‘ঢাকের বাদ্যি’। ঢাক যে শুধু শব্দ উৎপাদক একটা সরঞ্জাম নয় সেটা যাঁরা বোঝেন, তাঁরাই ‘রিয়েল ঢাকি’।
আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার বলি। ঢাকের আওয়াজ কিন্তু বদলে গিয়েছে। আগে ঢাকের ছাউনি তৈরি হতো চামড়া দিয়ে। এখন অনেক ক্ষেত্রেই প্লাস্টিক দিয়ে ছাউনি বানানো হয়ে থাকে। ফলে, চামড়ায় যেমন আওয়াজ হতো এখন তেমন হয় না। অনেক ঢাকি তাঁদের অভিজ্ঞতা দিয়ে সেই খামতি পুরণের চেষ্টা করে থাকেন। কেউ সাবেকিয়ানা ধরে রাখলে পালক গুঁজে নাচের ভঙ্গিটাও ধরে রাখেন।