নিজের ওয়ার্ডে হামলার শিকার হন শিলিগুড়ির বিজেপি কাউন্সিলর অমিত জৈন। — নিজস্ব চিত্র।
নিজের ওয়ার্ডেই সোমবার রাতে হামলার শিকার হন শিলিগুড়ির বিজেপি কাউন্সিলর অমিত জৈন। এই অভিযোগ তুলে প্রতিবাদে পথে নেমেছিল বিজেপি। সেই সময় পুলিশ দলের দুই বিধায়ককে আটক করে বলে অভিযোগ।
অমিত শিলিগুড়ি পুরনিগমের বিরোধী দলনেতা। বিজেপির দাবি, সোমবার রাতে তাঁর ওয়ার্ডে বালি, পাথরের সিন্ডিকেট নিয়ে গন্ডগোল চলছে বলে অমিতের কাছে খবর আসে। ঘটনাস্থলে পৌঁছন অমিত। সেখানে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলার সময় কয়েক জন তাঁর উপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিজেপির অভিযোগ, অমিতের উপর হামলা চালিয়েছে তৃণমূলের লোকজন। বিজেপি আঙুল তুলেছে এলাকার প্রাক্তন কাউন্সিলর প্রদীপ গোয়েলের দিকেও। তাদের অভিযোগ, প্রদীপের নেতৃত্বে এলাকায় সিন্ডিকেট রাজ চলছে।
প্রদীপ অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমি যখন কাউন্সিলর ছিলাম, তখন এই ধরনের ঘটনা ঘটেনি। কোনও বালি বা পাথরের সিন্ডিকেট ছিল না। সোমবার রাতের ঘটনার খবর পেয়ে আমিও উপস্থিত হই। দেখি কাউন্সিলর রয়েছেন। অন্যদের সঙ্গে তাঁর কথাকাটাকাটি চলছে। পরিস্থিতি সামাল দিয়ে আমিই সকলকে সেখান থেকে বাড়ি পাঠিয়ে দিই। কিন্তু আমার নামই জড়িয়ে যাচ্ছে।’’
অন্য দিকে, আহত কাউন্সিলর অমিত বলেন, ‘‘স্থানীয় এক জন আমাকে ফোন করে ডাকেন। জানান, বালি, পাথরের সিন্ডিকেটের কাছ থেকে তিনি বাড়ি তৈরির জিনিস নেননি বলে তাঁর বাড়িতে প্রাক্তন কাউন্সিলর ও তাঁর লোকেরা চড়াও হন। সেখানে যাই। বচসা শুরু হয়। তারপর প্রাক্তন কাউন্সিলর হামলা চালান।’’
ঘটনার প্রতিবাদে শিলিগুড়ি সাংগঠিক জেলা বিজেপির পক্ষ থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক বিক্ষোভ কর্মসূচি আয়োজন করা হয়। তা মাঝপথে আটকে দেয় পুলিশ। পুলিশ বাহিনীর সাথে ধস্তাধস্তি শুরু হয় বিজেপি কর্মীদের। বেশ কয়েক জন বিজেপি কর্মীকে আটকের পর মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিধায়ক আনন্দময় বর্মণ এবং ফাঁসিদেওয়ার বিধায়ক দুর্গা মুর্মুকে আটক করে পুলিশ।
বিজেপি বিধায়ক তথা শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি আনন্দময় বলেন, ‘‘তৃণমূলের তৈরি সিন্ডিকেটের দ্বারা আহত আমাদের কাউন্সিলর। তারই প্রতিবাদে আমাদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি। কিন্তু পুলিশ তা আটকে দিয়ে আমাদেরও আটক করে। পুলিশের দলদাসে পরিণত হয়ে যাওয়া ঠিক নয়। আমরা আইনের দ্বারস্থ হব।’’
অন্য দিকে, দার্জিলিং জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র বেদব্রত দত্ত সব অভিযোগ উড়িয়ে দেনে। তিনি বলেন, ‘‘যাঁদের মধ্যে সমস্যা হয়েছে, তাঁরা দু’জনই বিজেপির। প্রাক্তন কাউন্সিলর তৃণমূলের নয়। কাজেই আমি বলব এটা ওদের দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়।’’