মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকার সময়ই ঘোষণা হয়েছিল রাজবাড়ির আদলে তৈরি করা হবে নিউ কোচবিহার স্টেশন। তার পর কেটে অনেক বছর। কাজও হয়েছে। তবে রাজবাড়ির একটি অংশের আদলে তৈরি করেই থেমে গিয়েছে রেল দফতর। বাকি অংশের কাজ কবে হবে, তা নিয়ে কারও কোনও উদ্যোগ না দেখে ক্ষোভ চরমে উঠেছে বাসিন্দাদের মধ্যে। বিষয়টি নিয়ে কোচবিহারের সাংসদ পার্থপ্রতিম রায় রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলকে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। খুব দ্রুত ওই স্টেশন রাজবাড়ির আদলে না তৈরি করা হলে আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়েছে কোচবিহার হেরিটেজ সোসাইটি।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ারের ডিআরএম সিভি রমণ বলেন, “নিউ কোচবিহার স্টেশন তৈরির কাজ প্রকল্প অনুযায়ী হয়েছে। পরিকাঠামো তৈরির কাজ কিছু বাকি আছে। তা করা হবে।” কোচবিহারের সাংসদ পার্থপ্রতিম রায় দাবি করেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকার সময়ে নিউ কোচবিহার সহ বিভিন স্টেশন স্থানীয় হেরিটেজ ভবনের আদলে তৈরির কথা ঘোষণা করেছিলেন। সে ব্যাপারে তিনি সে সময় উদ্যোগী হন। রেলবোর্ড থেকে প্রকল্প ঘোষণা হয়। টাকাও বরাদ্দ করা হয়। বহু জায়গায় কাজ শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, “ওই প্রকল্পের সঙ্গে কোচবিহারের আবেগ জড়িয়ে আছে। তা না হওয়া আমরা মেনে নিতে পারি না। বর্তমান রেল দফতরের ঢিলেমির জন্য এমনটা হচ্ছে। চিঠি দিয়ে দ্রুত কাজ শুরুর দাবি করব।”
কোচবিহার রাজবাড়ির সঙ্গে রেলের সম্পর্ক দীর্ঘ দিনের। রাজার আমলেই রেলপথ ছিল। রেল চলাচল করত কোচবিহারে। সে কারণে কোচবিহার স্টেশনে মদনমোহন মন্দিরের আদলে রেল মিউজিয়াম তৈরি হয়েছে। মমতা নিউ কোচবিহার স্টেশনকে রাজবাড়ির আদলে করার কথা ঘোষণা করার পরে জেলায় খুশি ছড়িয়ে পড়ে। রেল মিউজিয়াম তৈরির পরে তা নিয়ে আশায় বুক বাঁধেন বাসিন্দারা। কিছু দিনের মধ্যে কাজ শুরু হয়। কোচবিহার হেরিটেজ সোসাইটির সম্পাদক অরূপ মজুমদার অভিযোগ করেন, রাজবাড়ির আদলে স্টেশনের ভবন তৈরির কাজ শুরু হয়। বাঁ দিকের অংশের কাজ করার পর থেকেই তা বন্ধ হয়ে রয়েছে। তিনি বলেন, “রাজবাড়ির আদলে করার কথা হলেও আদতে করা হয়নি। শুধু বাঁ দিকের অংশের আকার এসেছে। বাকি অংশের কাজ না করলে তা আমরা মেনে নেব না। আমরা চাই দ্রুততার সঙ্গে ওই কাজ করা হোক।” ইতিমধ্যেই জলপাইগুড়ি রোড স্টেশন জলপাইগুড়ি রাজবাড়ির সিংহদুয়ারের আদলে তৈরির কাজ চলছে।