প্রতীকী ছবি।
লালারস পরীক্ষায় করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। আবার রক্তপরীক্ষায় ধরা পড়েছে ডেঙ্গিও। একজনের দেহে একইসঙ্গে দুই ভাইরাসের সংক্রমণের নজির মিলেছে উত্তরবঙ্গে। একইসঙ্গে দু’টি সংক্রমণের ঘটনা আশঙ্কা বাড়িয়েছে চিকিৎসকদের।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মালবাজার পুর এলাকার এক জন এবং নাগরাকাটার আর এক বাসিন্দা সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেই অবস্থায় তাঁদের দু’জনেরই ডেঙ্গির সংক্রমণও ঘটেছে বলে এনএস-১ এলাইজা পরীক্ষা থেকে জানা গিয়েছে। মালবাজার পুর এলাকার ডাকবাংলো পাড়ার বাসিন্দা ৪০ বছরের ওই ব্যক্তির দেহে করোনা ধরা পড়ে ২৬ অক্টোবর। ২৯ অক্টোবর এনএস-১ পরীক্ষায় তাঁর শরীরে ডেঙ্গির সংক্রমণও মিলেছে। নাগরাকাটার হিলা চা বাগানের ফ্যাক্টরি লাইনের বাসিন্দা ২৩ অক্টোবর করোনায় আক্রান্ত হন। তাঁর ক্ষেত্রে আগেরদিন, ২২ অক্টোবর এনএস-১ পরীক্ষায় ডেঙ্গির সংক্রমণ ধরা পড়েছিল।
উত্তরবঙ্গে করোনা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা ওএসডি সুশান্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘একই সঙ্গে করোনা এবং ডেঙ্গির সংক্রমণ বিপজ্জনক। উত্তরবঙ্গে সম্প্রতি দু’জনের ক্ষেত্রে তা নজরে এসেছে। বিষয়টি নিয়ে চিকিৎসকদের সেমিনার হয়েছে। সচেতনতা প্রচারও করা হচ্ছে।’’ তিনি জানান, এক সঙ্গে করোনা এবং ডেঙ্গি হলে রোগীর জটিলতা বেড়ে যায়।
করোনার মধ্যে ডেঙ্গির সংক্রমণ নিয়ে উদ্বিগ্ন চিকিৎসকরাও। বিশেষজ্ঞরা জানান, করোনা এবং ডেঙ্গি উভয়ক্ষেত্রেই জ্বর, গা-হাত-পা ব্যাথার মতো উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। উপসর্গ দেখে বিশেষজ্ঞরা নানা পরীক্ষা করছেন। তাতেই বিষয়টি নজরে এসেছে। ওএসডি জানান, যখনই এ ধরনের অসুস্থতা নজরে এসেছে স্বাস্থ্য দফতর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে। সমস্ত হাসপাতাল এবং কোভিডের চিকিৎসা যেখানে হচ্ছে সেখানে নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। কী ভাবে চিকিৎসা করা হবে তাও বলা হয়েছে।
করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ডেঙ্গি দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জুন থেকেই ডেঙ্গি নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে জেলাগুলোকে। ডেঙ্গি প্রতিরোধের কাজে জেলা স্বাস্থ্য দফতর এবং পুরসভাগুলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে বারবার। তবে এবছর ডেঙ্গির সংক্রমণ প্রায় মিলছিল না। তবে বুধবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ৭ জনের দেহে তাঁরা ডেঙ্গির সংক্রমণ পেয়েছেন। তার মধ্যে দার্জিলিং জেলার খড়িবাড়ির এক জন রয়েছেন। এক জন কালিম্পঙের বাসিন্দা। জলপাইগুড়ির বাসিন্দা রয়েছেন ৩ জন এবং ২ জন উত্তর দিনাজপুরের। এদের মধ্যে দু’জনের দেহে এনএস-১ পরীক্ষায়, বাকিদের ম্যাক এলাইজায় সংক্রমণ মিলেছে।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান অরুণাভ সরকার বলেন, ‘‘এখানে এক ব্যক্তির জেই, ডেঙ্গি, চিকনগুনিয়া এলাইজা পরীক্ষায় পজ়িটিভ দেখাচ্ছিল। প্রথমে সংশয় হয়। সবই ফ্ল্যাভি ভাইরাস। অ্যান্টিজেনগত ভাবে অনেকটা এক। পরে নিউক্লিক অ্যাসিড টেস্ট করে জানা যায় সেটি জাপানি এনসেফ্যালাইটিস। এগুলো মশা বাহিত। কোভিড আলাদা ভাইরাস। সেটা অন্য রোগের সঙ্গে আলাদা ভাবে হতেই পারে।’’