ডেঙ্গির দাপট রুখতে শিলিগুড়িতে পুজো মণ্ডপে সচেতনতা প্রচার বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার শহরের ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে পুরসভায় স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে বৈঠক করেন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার এবং সমীক্ষা চালাবে স্বাস্থ্যকর্মীরা। ঠিক হয়েছে পুজোর আগে ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ৭ অক্টোবর সচেতনতা প্রচারে বিশেষ অভিযানে নামবে শিলিগুড়ি পুরসভা এবং স্বাস্থ্য দফতর। মণ্ডপে ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতা প্রচার না করা হলে, পুরসভার তরফে সংশ্লিষ্ট কমিটিকে পুজোর অনুমতি দেওয়া হবে না বলেও জানিয়েছেন মেয়র।
অগস্টের মাঝামাঝি সময় থেকে ডেঙ্গির প্রকোপ মারাত্মক বেড়েছে। গত ২৭ দিনে শহরের বাসিন্দা অন্তত ৪০ জন আক্রান্ত হয়েছেন ডেঙ্গিতে। পরিস্থিতি নিয়ে সে কারণে এ দিন পুরসভায় বৈঠক ডেকেছিলেন মেয়র। তিনি জানান, যে সমস্ত বাসিন্দাদের ডেঙ্গি সংক্রমণ হয়েছিল, তাঁদের বাড়ির আশেপাশে ৫০ মিটার জুড়ে এলাকা সাফ সুতরো করা হয়েছে। মশা মারতে তেল স্প্রে-ও করা হয়েছে।
পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা ওই বাড়িগুলিতে গিয়ে পরিস্থিতি দেখেও এসেছেন। তিনি বলেন, ‘‘এ বছর রাজ্যে ডেঙ্গির মাত্রাতিরিক্ত সংক্রমণ হয়েছে। বিশেষ করে কলকাতায়। গত বারের চেয়ে এ বছর শিলিগুড়িতেও ডেঙ্গির সংক্রমণ বেশি। তবে কলকাতার মতো পরিস্থিতি নয়। তাই বলে আমরা কোনও ঝুঁকি নিয়ে চাই না। সে জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে সচেতনতা প্রচার এবং অন্যান্য ব্যবস্থা নিতে জোর দেওয়া হচ্ছে। মাইকিং করেও শহরে প্রচার চালানো হবে। পুজো মণ্ডপে প্রচার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।’’ পুরসভা এবং স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, তবে এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে কোনও মৃত্যুর খবর নেই শিলিগুড়িতে। জেলা হাসপাতালে ডেঙ্গি নিয়ে এ মুহূর্তে কেউ ভর্তি নেই বলেই জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্যবিভাগ। তবে জ্বরের রোগী রয়েছেন। নার্সিংহোমগুলিতেও ডেঙ্গি আক্রান্ত কোনও রোগী থাকার তথ্য পুর কর্তৃপক্ষ এবং স্বাস্থ্য দফতরের কাছে নেই বলে জানানো হয়।
স্বাস্থ্য দফতরের তথ্যই বলছে সপ্তাহে ৮/৯ জন আক্রান্ত হচ্ছেন ডেঙ্গিতে। দার্জিলিং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসিত বিশ্বাস জানান, পুজোর সময় মণ্ডপে জনসমাগমকে কাজে লাগিয়ে প্রচার চালালে ভাল ফল মিলবে। সেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে উদ্যোক্তাদের প্রচার ‘সিডি’ দেওয়া হবে। মণ্ডপে তা চালানোর জন্য কর্মকর্তাদের বলা হবে। সেই সঙ্গে ফ্লেক্সে ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতা প্রচারের ব্যবস্থা করতে ক্লাবগুলিকে জানানো হচ্ছে। শিলিগুড়ি শহরের বিভিন্ন নির্মাণ কাজের জায়গাগুলিতে জল জমে থাকার অভিযোগ তুলেছেন বাসিন্দারা। মেয়র জানিয়েছেন, দফতরের বাস্তুকাররা বিষয়টি দেখছেন। তাদের নিয়ে দু’এক দিনে বৈঠক করে পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করবেন।