দাবি: পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়ির সামনে জমায়েত টোটো চালকদের। রবিবার। ছবি: বিনোদ দাস।
জাতীয় সড়কে টোটো চালাতে দেওয়ার দাবি নিয়ে রবিবার সাতসকালে তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়ি ঘেরাও করলেন কয়েকশো টোটো চালক। এরপর নিজের ‘দুয়ারে’ বসেই চালকদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন প্রধান দিলীপ রায়। চালকদের সব কথা শুনে আশ্বাস দেন, সমস্যা নিয়ে তিনি কথা বলবেন প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে। প্রধানের এই আশ্বাসের পর শেষমেশ চালকেরা বাড়ির সামনে থেকে উঠে যান।
তবে টোটো বন্ধ করা নিয়ে শহর জুড়ে ফের বড় আন্দোলন ও অশান্তির আশঙ্কা করছেন পুলিশ কর্তারা।
১ জানুয়ারি থেকে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট এলাকায় নম্বরবিহীন টোটোর বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছে ট্র্যাফিক পুলিশ। তারপর থেকে পালটা আন্দোলনে নেমেছেন টোটো চালকেরা। শনিবার দার্জিলিং মোড়ে জমায়েত করে বিক্ষোভে শামিল হন বহু চালক। এ বার সেই বিক্ষোভ শুরু হয়েছে শহর সংলগ্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতেও। নৌকাঘাট, ফুলবাড়িতে জাতীয় সড়কে টোটো উঠতে দেওয়া হচ্ছে না পুলিশের তরফে। এতে ক্ষোভ জানিয়েছেন চালকেরা। ওইসব রাস্তায় টোটো চালানোর দাবি নিয়ে রবিবার সিপাইপাড়ায় পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়ি ঘেরাও করেন কয়েকশো টোটো চালক। সকাল ১০টা থেকে বেলা ১২টা অবধি ঘেরাও করে রাখা হয় তাঁর বাড়ি। শেষে বাড়ির বাইরে এসে বসেই চালকদের অভিযোগ শোনেন দিলীপ।
টোটো চালক মফিজুল মণ্ডলের কথায়, ‘‘এখন আমাদের সামনে সব রাস্তা বন্ধ। জাতীয় সড়কে যদি টোটো উঠতে না দেওয়া হয় তাহলে অলিগলিতে কোথায় যাত্রী পাব? ঋণ নিয়ে টোটো কিনে চালাচ্ছেন অনেকে। তাঁদের কথাও ভাবা দরকার।’’ অন্য চালকদেরও একই বক্তব্য, টোটো চালানো ছেড়ে দিলে কী কাজ কবেন তাঁরা?
এ দিন ঘেরাও প্রসঙ্গে পঞ্চায়েত প্রধান দিলীপ রায়ের বক্তব্য, ‘‘ঘেরাও নয়। নিজেদের লোক সমস্যার কথা জানাতে এসেছেন। শুনেছি সব।’’ পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘‘প্রশাসনের এই মানুষগুলির কথা ভাবা উচিত। এতগুলো পরিবার এখন কোথায় যাবে? বিষয়টি মন্ত্রী গৌতম দেবকে জানানো হবে। মহকুমাশাসক, পুলিশ কমিশনারকেও চিঠি পাঠানো হবে। টোটো ইউনিয়নগুলিকে নিয়েও আলোচনায় বসব।’’
তবে কিছুদিন আগে মন্ত্রী গৌতম নম্বরবিহীন টোটো ও জাতীয় সড়কে টোটোর চলাচল নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন৷ তিনি নিজেই টোটো নিয়ন্ত্রণ করা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন বলে জানান। সেখানে তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধান টোটো চালকদের আন্দোলনে পাশে থাকার আশ্বাস দেন। যা ঘিরে বিতর্কও শুরু হয়েছে। শহরে যানজট সমস্যা মেটাতে পুলিশের কড়াকড়ি ভূমিকার প্রশংসা করছেন শহরবাসী। সেখানে নম্বরবিহীন টোটো চালকদের আন্দোলনে রাজনৈতিক রং লাগলে আখেরে যানজট সমস্যা মিটবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে।