বকেয়া বেতন মিটিয়ে দেওয়া ও নিয়মিত বেতন দেওয়ার দাবিতে গত প্রায় তিন মাস ধরে অবস্থান বিক্ষোভ করার পরেও কর্তৃপক্ষের তরফে স্পষ্ট কোনও আশ্বাস মিলছে না। এই অভিযোগ তুলে বুধবার রাত ১টা পর্যন্ত সংস্থার আধিকারিকদের ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন বিএসএনএলের অনথিভুক্ত অস্থায়ী কর্মীদের একাংশ।
ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায় বিএসএনএলের দুই দিনাজপুরের প্রশাসনিক কার্যালয়ে। এ দিন আন্দোলনকারীদের দাবি পূরণে কী করণীয়, তা ঠিক করতে বিকাল ৫টা নাগাদ সংস্থার আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকে বসেন বিএসএনএলের দুই দিনাজপুরের টেলিকম ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার আর রবি ও সহকারি জেনারেল ম্যানেজার প্রদীপ সরকার। রাত ৮টা পর্যন্ত ওই বৈঠক চলে। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, বৈঠক শেষ হওয়ার পর তাঁদের কোনও স্পষ্ট আশ্বাস না দিয়েই সংস্থার আধিকারিকেরা দফতরের চেম্বার ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। সেই সময় আন্দোলনকারীরা রবিবাবু ও প্রদীপবাবু সহ বিএসএনএলের ১৪ জন আধিকারিককে ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করেন। বিরাট পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেও বিএসএনএলের আধিকারিকদের ঘেরাওমুক্ত করতে ব্যর্থ হন।
এর পর প্রশাসনের কর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আন্দোলনকারী ও সংস্থার আধিকারিকদের সঙ্গে পৃথকভাবে বৈঠক করেন। রাত ১টা নাগাদ বিএসএনএলের কর্তারা আন্দোলনকারীদের এক দিনের মধ্যে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এরপরেই সংস্থার আধিকারিকদের দফতর থেকে বাইরে বার করে দেয় পুলিশ। আন্দোলনকারীরা স্পষ্ট আশ্বাস না পাওয়ায় বৃহস্পতিবারও আগের মতো দফতর চত্বরে অবস্থান বিক্ষোভ জারি রেখেছেন।
রবিবাবু ও প্রদীপবাবু কোনও মন্তব্য করতে চাননি। দফতরের এক আধিকারিকের দাবি, আন্দোলনকারীদের নিয়োগ সংক্রান্ত বৈধ নথি না থাকায় তাঁদের বকেয়া বেতন মিটিয়ে নিয়মিত বেতন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করছেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৩ নভেম্বর থেকে বিএসএনএলের দুই দিনাজপুরের বিভিন্ন টেলিফোন এক্সচেঞ্জ ও প্রশাসনিক কার্যালয়ে কর্মরত অনথিভুক্ত অস্থায়ী কর্মীদের একাংশ কংগ্রেস প্রভাবিত বিএসএনএল শিল্প সহায়ক ইউনিয়নের তরফে সংস্থার দুই দিনাজপুরের প্রশাসনিক কার্যালয় চত্বরে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেছেন।
ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সুশান্ত ভদ্রের দাবি, সংস্থার অনথিভুক্ত অস্থায়ী কর্মীরা গত দুই থেকে আড়াই দশক ধরে কর্মরত রয়েছেন। তাঁর প্রশ্ন, বিএসএনএলের কাছে যদি অনথিভুক্ত অস্থায়ী কর্মীদের নিয়োগ সংক্রান্ত কোনও বৈধ নথি না থাকে, তাহলে অতীতে কী ভাবে তাঁদের কাজ করিয়ে প্রতিমাসে বেতন মেটালেন কর্তৃপক্ষ? এই প্রশ্নেও অবশ্য মুখে কুলুপ এঁটেছেন রবিবাবু ও প্রদীপবাবু।
সুশান্তবাবুর অভিযোগ, দুই দিনাজপুরে কর্মরত সংস্থার অনথিভুক্ত অস্থায়ী কর্মীদের মধ্যে ৯ জন গত এপ্রিল ও ১৩৬ জন গত জুন থেকে বেতন পাচ্ছেন না। বকেয়া ও নিয়মিত বেতন না পেয়ে তাঁরা চরম আর্থিক সঙ্কটে পড়েছেন।