আসছে দোল। পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ী। বালুরঘাটে। ছবি: অমিত মোহান্ত
কেউ ভরসা রেখেছেন সবুজে। কেউ গেরুয়ায়। লালও একেবারে উড়িয়ে দেননি কেউ। কেউ কেউ আবার এ সবের থেকে দূরে। ভরসা রেখেছেন হলুদে। সবমিলিয়ে দোলের আগে জমে উঠেছে আবিরের বাজার। এমনটা দেখে কেউ কেউ মজা করে বলছেন, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোন রঙের দিকে ঝোঁক থাকবে মানুষের জানি না। তবে দোলের বাজারে একে অপরকে টেক্কা দিচ্ছে সবুজ ও গেরুয়া। লাল পিছিয়ে গিয়েছে হলুদের থেকেও।’’ কোচবিহারের এক আবির বিক্রেতা সুকুমারচন্দ্র দে বলেন, “লাল আবির শুধু ঠাকুরের পুজোয় কাজে লাগানো হয়, তাই ওই রঙের আবিরের চাহিদা একটু কম। অন্য রঙের আবির নিয়ে খেলায় মেতে ওঠেন সবাই। তাই চাহিদা বেশি।”
সুকুমারবাবুর দোকান রয়েছে কোচবিহার ভবানীগঞ্জ বাজারে। তিনি এ বার ৪ কুইন্ট্যাল করে সবুজ ও গেরুয়া আবির তুলেছেন। হলুদ আবিরও তুলেছেন প্রায় তিন কুইন্ট্যাল। সেই তুলনায় লাল আবির তুলেছেন অনেকটাই কম। শহরতলি ও গ্রামের বাজারের ব্যবসায়ীরাও আবির মজুত করতে শুরু করেছেন। তাঁরা বলেন, “খুচরো বিক্রি এখনও শুরু হয়নি। দোলের একদিন আগে থেকে খুচরো বিক্রি শুরু হয়। তবে পাইকারিতে গেরুয়া ও সবুজ আবিরই সবাই রাখছেন।” ব্যবসায়ীরা জানান, গেরুয়া, সবুজ ও হলুদ রঙের হার্বাল আবিরের চাহিদাও রয়েছে বাজারে। তাঁরা সেই আবিরও মজুত করছেন। কোচবিহার জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক চাঁদমোহন সাহা বলেন, “আবির খেলায় সবাই মেতে ওঠেন। যার যেমন পছন্দ তেমন নিয়ে যান, সেখানে অন্য কোনও ব্যাপার নেই।’
তৃণমূলের রং সবুজ, বিজেপির গেরুয়া ও বামেদের লাল। নির্বাচনের বাজারে কে এগিয়ে রয়েছে, কে জিততে পারে ভোটে সব ভেবেই ব্যবসায়ীরা আগাম মজুত করে রাখে। কারণ, প্রায় সব জায়গায় ভোটে জয়ের পরে আবির খেলায় মেতে ওঠেন নানা রাজনৈতিক দলের কর্মী সমর্থকরা। গত ছ’বছরের বেশি সময় ধরে সবুজ আবিরেই ভরসা রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। আর কিছুদিন পরেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। সেখানেও অনেকেরই ধারণা, এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। তাই এই সময় থেকেই একবারে কিছু বেশি আবির মজুত করে পঞ্চায়েত নির্বাচন পার করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এক ব্যবসায়ী বলেন, “দোলের উৎসবেও খুব হালকা করে হলেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মীদের মধ্যে রং পছন্দের লড়াই থেকে যায়। আমরা সব ভেবেই আবির মজুত করি।”
বিজেপি থেকে শুরু করে বাম এমনকি শাসকদলের নেতাদের অবশ্য দাবি, “উৎসবের সঙ্গে রাজনীতি জড়িয়ে ফেলা ঠিক নয়। এখানে সবাই পছন্দের রং নিয়ে আনন্দে মেতে ওঠেন।”