উদ্যাপন: হুল দিবসের অনুষ্ঠানে লোকশিল্পীরা। কোচবিহারের বোচামারিতে। শুক্রবার। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।
তির-ধনুক-হাঁসুয়া-কুড়ুল নিয়ে রাস্তায় নেমে রেল এবং জেলা প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করে আদিবাসীরা বিক্ষোভ করলেন দক্ষিণ দিনাজপুরে। শুক্রবার হুল দিবসকে সামনে রেখে আদিবাসীদের একাধিক সংগঠনের নেতৃত্বে কয়েকশো মানুষ দিনটিকে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা-সহ একগুচ্ছ দাবিতে সরব হন।
এ দিন দুপুর ১২টা নাগাদ ভারত জাকাত মাঝি পরগনা মহলের নেতৃত্বে বুনিয়াদপুরে রেলস্টেশনে অবরোধ শুরু হয়। কয়েকশো আদিবাসী তির-ধনুক, লাঠি, বল্লম নিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন রেললাইনে। ফলে আটকে পড়ে কাটিহার-বালুরঘাট প্যাসেঞ্জার এবং বালুরঘাট-নিউ জলপাইগুড়ি এক্সপ্রেস ট্রেন।
পরে রেল পুলিশের অনুরোধে দুপুর আড়াইটে নাগাদ অবরোধ তুলে নিলে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। সংগঠনের জেলা সভাপতি বাবুলাল মুর্মু অভিযোগ করেন, ‘‘আদিবাসীদের জল-জমি-জঙ্গলের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার চক্রান্ত চলছে। শংসাপত্র প্রদান থেকে সমস্ত সরকারি সুবিধা পেতে আদিবাসীরা ধারাবাহিকভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন।’’
তাঁদের দাবি, ঝাড়খণ্ড সরকার সাঁওতাল বিরোধী আইন পাশ করার চেষ্টা করছে। তাদের দাবি পূরণ না হলে আগামী দিনে পাহাড়ের মতো এই জেলাতেও আদিবাসীরা লাগাতার আন্দোলন করবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ভারত জাকাত মাঝি পরগনা।
একই দাবির সমর্থনে এ দিন বিকেলে বালুরঘাটের চকভৃগু এলাকা থেকে সশস্ত্র বিক্ষোভ মিছিল বের করে আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযান। বালুরঘাট শহর পরিক্রমা করে জেলাশাসকের কার্যালয়ের সামনে বসে কয়েকশো আদিবাসী পুরুষ ও মহিলা ঘেরাও করেন। বিক্ষোভ চলাকালীন প্রশাসনিক ভবন চত্বরে জেলার মন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা এবং সভাধিপতি ললিতা টিগ্গার কুশপুতুলও দাহ করা হয়।
সেঙ্গেল অভিযান সংগঠনের নেতা বিভূতি মুর্মু অভিযোগ করেন, অন্য ধর্ম ও জাতির নিজস্ব উৎসবে সরকারি ছুটি থাকলেও ব্যতিক্রম শুধু আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজনেরাই। দেশের জন্য শহীদ বীর সিধু কানহু মুর্মু এবং বিরসা মুন্ডার জন্ম ও মৃত্যুদিবসে কোনও সরকারি ছুটি দেওয়া হয় না। তাই হুলদিবসে সরকারি ছুটি ঘোষণা না হলে পরে বড় আন্দোলন শুরু হবে বলেও বিভূতিবাবু জানিয়েছেন।