পাহাড়ের পথে। নিজস্ব চিত্র
মাঝেমধ্যেই টয় ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনা ঘটে। তা নিয়ে যাত্রী নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার অভিযোগ আগেই ছিল। এ বার শুরু হয়েছে অস্বাভাবিক দেরিও। এনজেপি-দার্জিলিং রুটে টয় ট্রেন সপ্তাহের বেশিরভাগ দিনই দেরিতে চলছে বলে অভিযোগ। কয়েক মাস হল ট্রেনের সূচিতে বদল করা হয়েছে। তবুও দেরির সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারেনি দার্জিলিং হিমালয়ান রেল। রেলকর্তাদের আশ্বাস, ট্রেনটি সময়ে চালানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
পর্যটনের মরসুমে এনজেপি থেকে সুকনা পৌঁছতেই অনেকটা সময় লেগে যাচ্ছে। যার ফলে দার্জিলিং পৌঁছতে বেশিরভাগ দিনই বিকেলের বদলে রাত হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। গত সপ্তাহে দু’দিন রাত ন’টায় দার্জিলিং স্টেশন পৌঁছেছে এনজেপি-দার্জিলিং টয় ট্রেন। মঙ্গলবারও নির্ধারিত সময়ের থেকে প্রায় দু’ঘণ্টা দেরিতে দার্জিলিং পৌঁছয় ট্রেনটি। দার্জিলিং হিমালয়ান রেলের অধিকর্তা এমকে নার্জারি বলেন, ‘‘কিছুটা সমস্যা রয়েছে। তা আমরা কাটানোর চেষ্টা করছি। তবে ব্রডগেজ লাইনে ট্রেনের সূচির গোলমাল হলে একটু সমস্যা হয়।’’
কিন্তু ব্রডগেজ লাইনের জন্য টয় ট্রেনের গোলমাল কেন হচ্ছে? রেলকর্তারা জানান, এনজেপি থেকে সুকনা যাওয়ার পথে টয় ট্রেনের লাইনকে তিন জায়গায় ব্রড গেজ লাইন পেরতে হয়। এ দিকে রেল বোর্ডের নীতি রয়েছে যে ব্রডগেজ লাইনে ট্রেন থাকলে সেটিকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। ফলে প্রয়োজনে টয় ট্রেন দাঁড় করিয়ে রাখতে হয়।
পুজোর আগে আলুয়াবাড়ি এনজেপি শাখায় বৈদ্যুতিকরণের কাজের জন্য দিল্লি এবং কলকাতা থেকে আসা একাধিক ট্রেন দেরি করছিল। তখন টয় ট্রেনের দেরি থেকে রেহাই পেতে ট্রেন ছাড়ার সময় সকাল সাড়ে আটটার বদলে বেলা ১০টা করে দেওয়া হয়। এখন নতুন সূচিতে চলতে গিয়েও ট্রেনটি দেরি করছে বলে অভিযোগ। রেলকর্তাদের দাবি, মেন লাইনে (ব্রড গেজ) সকাল ৮ থেকে শুরু করে বেলা ৯টা ৪৫ পর্যন্ত এনজেপি থেকে শিলিগুড়ি হয়ে চলে কাঞ্চনকন্যা, কামাখ্যা-পুরি এক্সপ্রেস, কর্মভূমি এক্সপ্রেস এবং লখনউ-কামাখ্যা সাপ্তাহিক ট্রেনগুলি। সেই সময় ব্রড গেজ লাইন পার করে টয় ট্রেন চালানো অসম্ভব।
কিন্তু এর জেরে মার খেয়ে যাচ্ছে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের বেড়ানো। দিনক্ষণ হিসেব কষে পর্যটকদের হোটেল, গাড়ি বুকিং হয়। যাতায়াতে দেরি হলে তাঁদের ঘোরার সূচির ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড টুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘টয় ট্রেন পরিষেবার মান বাড়াতে একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করা দরকার রেলের। এ ভাবে জোড়াতালি দিয়ে কতদিন সমস্যার সমাধান হবে?’’