সকাল থেকে সাড়াশব্দ মেলেনি এক ছাত্রীর। সহপাঠীরা গিয়ে জোরে ধাক্কা দিতেই খুলে গেল দরজা। জানলার শিকের সঙ্গে উলের স্কার্ফ গলায় জড়িয়ে মেঝেতে দু’পা ছড়িয়ে পড়ে ছিল ছাত্রীটির দেহ। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের দাবি, দার্জিলিঙের সিংমারির বাসিন্দা ওই ছাত্রী আত্মহত্যাই করেছেন। তবে ছাত্রীটির সহপাঠী এবং পরিজনদের বক্তব্য, তাঁকে খুন করা হয়েছে।
ওই তরুণী উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর ঘেঁষা একটি মেসবাড়িতে থাকতেন। সহপাঠীদের কয়েকজনের দাবি, তাঁর নিম্নাঙ্গে কোনও পোশাক ছিল না। মেঝেতে বসে থাকা অবস্থায় কেউ ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হতে পারেন কি না, সে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। খুনের তদন্ত দাবি করে এ দিন বিকেলে থানায় গিয়েছিলেন ছাত্রীটির সহপাঠীরাও। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচা জানান, সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পূর্বধারণা নিয়ে তদন্ত হবে না। কেউ জড়িত থাকলে দ্রুত ধরা পড়বে।
এই ঘটনায় এক যুবকের নামও জড়িয়েছে। মাঝে মধ্যেই অশালীন মেসেজ পাঠিয়ে সে ওই ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করত বলে অভিযোগ। সম্পর্ক তৈরি করতে চাপ দিয়ে হুমকি দিয়ে ফোনও করত বলে দাবি। ছাত্রীর মৃত্যুতে ওই যুবককে দায়ী করে মাটিগাড়া থানায় অভিযোগ করেছেন তরুণীর পরিবার। ওই যুবক ছাত্রীটির মেসে গিয়েও হুমকি দিত বলে সহ আবাসিকদের অনেকের দাবি। বৃহস্পতিবার রাতে মদ্যপ অবস্থায় বার বার ছাত্রীর মোবাইলে সে ফোন করে, এমন অভিযোগও উঠেছে।
ওই ছাত্রীর বাবা দার্জিলিঙের একটি সরকারি স্কুলের শিক্ষক। রোজ সকালে সে বাড়িতে ফোন করত। এ দিন সকালে ফোন না পেয়েই পরিবারের সবাই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। মোবাইলও বেজে যেতে থাকে। তাঁর বাড়ির লোক তখন এক সহপাঠীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। জানান, দরজায় টোকা দিয়ে সাড়া পাননি। পরে জোরে ধাক্কা দিতেই দরজা খুলে যায়। মেঝেতে পড়ে ছিল ছাত্রীটির দেহ। বিছানায় বালিশের পাশে বসানো ছিল তার প্রিয় টেডি বিয়ার।