গর্ভপাতের আর্জি হাসপাতালে

জটিলতা ভ্রূণে, দাবি

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার কৌশিক সমাজদার বলেন, ‘‘দুই দম্পতি উত্তরবঙ্গেরই বাসিন্দা। তাঁরা কোনও হাতুডে়র কাছে যাননি। চোরা-গুপ্ত কোনও ক্লিনিকে গিয়ে বিপাকে পড়ার রাস্তায় হাঁটেননি। এটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। আমরা দুই বধূর আবেদন পেয়েই গর্ভস্থ ভ্রূণের জটিলতা ও গর্ভপাত বিষয়ক পরামর্শদাতা স্থায়ী কমিটির বৈঠক ডেকেছি। সেখানেই সব নথিপত্র খতিয়ে দেখা হবে।’’

Advertisement

কিশোর সাহা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৪:৫০
Share:

—প্রতীকী ছবি।

দু’জনেই দরিদ্র পরিবারের বধূ। ডাক্তারি পরীক্ষায় দু’জনের গর্ভস্থ ভ্রূণেই ত্রুটি ধরা পড়েছে। গ্রামের অনেকে হাতুড়ের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কেউ গোপনে গর্ভপাত করানোর ব্যবস্থা করে দেবেন বলে বলেছিলেন। কিন্তু, দুই বধূর পরিবার চোরাপথে না হেঁটে আইনি পথে গর্ভপাতের রাস্তায় হাঁটছেন। আলাদা ভাবে হলেও দু’জনে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন করে গর্ভপাত করানোর অনুমতি চেয়েছেন।

Advertisement

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার কৌশিক সমাজদার বলেন, ‘‘দুই দম্পতি উত্তরবঙ্গেরই বাসিন্দা। তাঁরা কোনও হাতুডে়র কাছে যাননি। চোরা-গুপ্ত কোনও ক্লিনিকে গিয়ে বিপাকে পড়ার রাস্তায় হাঁটেননি। এটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। আমরা দুই বধূর আবেদন পেয়েই গর্ভস্থ ভ্রূণের জটিলতা ও গর্ভপাত বিষয়ক পরামর্শদাতা স্থায়ী কমিটির বৈঠক ডেকেছি। সেখানেই সব নথিপত্র খতিয়ে দেখা হবে।’’

তিনি জানান, প্রাথমিক ভাবে জানা যাচ্ছে, আবেদনকারি দু’জনের গর্ভাবস্থা ২০ সপ্তাহের বেশি নয় বলে তাঁরা জানিয়েছেন। সেটাও খতিয়ে দেখবে কমিটি। কারও গর্ভাবস্থা ২০ সপ্তাহের বেশি হলে সে ক্ষেত্রে আদালতের কাছে অনুমতি নিতে হবে বলে কয়েকজন চিকিৎসক জানান। হাসপাতাল সুপার জানান, গর্ভস্থ ভ্রূণের বয়স ১৮-১৯ সপ্তাহের মধ্যে হলে কোনও জটিলতা হবে না। তবে তার বেশি হলে তখন সেই মতো পদক্ষেপ করতে হবে। হাসপাতাল সূত্রেই জানা গিয়েছে, গর্ভস্থ ভ্রূণের পরিস্থিতি জটিল হলে কী করণীয় তা ঠিক করতে বিশেষজ্ঞদের মত নেওয়া বাধ্যতামূলক। সাধারণত, কেউ পরীক্ষার রিপোর্টে গর্ভস্থ ভ্রূণের ত্রুটি দেখার পরে গর্ভপাত করাতে চাইলে সরকারি বিশেষজ্ঞ কমিটির মত প্রয়োজন। কিন্তু, অনেক হাসপাতালেই সেই কমিটি গড়তে সময় লেগে যেত। তাই ‘মেডিক্যাল টার্মিনেশন অব প্রেগনেন্সি অ্যাক্ট, ২০০৩’ অনুযায়ী প্রতি জেলায় ওই কমিটি গঠনের বিধি চালু করে কেন্দ্র। সে সময়ে সব রাজ্যকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, যাতে সব জেলা হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজে গর্ভস্থ ভ্রূণের জটিলতা সম্পর্কে নিঃসন্দেহ হওয়া ও গর্ভপাতের গুরুত্ব বোঝানোর জন্য মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করতে হবে।

Advertisement

সেই মতো উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে একটি স্থায়ী বোর্ড রয়েছে। সেখানে স্ত্রীরোগ, শিশুরোগ, রেডিয়োলজি, পালমোনোলজি, প্যাথলজিস নিউরোলজি বিভাগের বিশেষজ্ঞেরা রয়েছেন। হাসপাতালের সুপার ওই বোর্জের আহ্বায়ক। তিনি জানান, ওই দু’জন আবেদনকারির সন্তান গর্ভে আসার পরে আলট্রাসোনোগ্রাফি ও পরে আরও কয়েকটি পরীক্ষায় ভ্রূণে জটিলতা নির্ণয় করেছেন বিশেষজ্ঞরা। চিকিৎসকেরা ওই দুই গর্ভবতীর পরিবারের অভিভাবকদের জানিয়েছেন, ভ্রূণের সঠিক বৃদ্ধি হচ্ছে না। মস্তিষ্কও ঠিকঠাক গঠিত হচ্ছে না। জন্মের পরে সন্তানকে বেশিদিন বাঁচানো মুশকিল হতে পারে। বাঁচলেও সন্তানের নানা প্রতিবন্ধকতা থাকার আশঙ্কা করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement