দিনমজুরির দিন শেষ হবে?

পল্টু মাধ্যমিক পাশ করে রাজমিস্ত্রির সঙ্গে দিনমজুরের কাজও নিয়েছে। না হলে উপায় নেই। কারণ বাড়িতে তাঁর বাবা একমাত্র রোজগার করেন। তিনিও দিনমজুর। দিন গেলে সাকুল্যে দু’শো টাকার বেশি আয় হয় না। সংসারে বাবা-মা ছাড়া তাঁরা তিন ভাই, দু’বোন। বড় বোনের বিয়ে হয়েছে।

Advertisement

রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়

হলদিবাড়ি শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৭ ১৩:০০
Share:

সারা দিন হাড়ভাঙা খাটনির পর বাড়ি ফিরে শেষ রাত পর্যন্ত পড়া। পর দিন ঘুম থেকে উঠে ফের দিনমজুরি। কাজ থেকে ছুটি পেলে স্কুল। সেটাও সপ্তাহে এক বা দু’দিন। এ ভাবেই পড়াশোনা চালিয়ে উচ্চমাধ্যমিকে শতকরা ৮০ নম্বর পেয়েছে হলদিবাড়ি থানার দেওয়ানগঞ্জ হাইস্কুলের ছাত্র পল্টু বর্মন।

Advertisement

পল্টু মাধ্যমিক পাশ করে রাজমিস্ত্রির সঙ্গে দিনমজুরের কাজও নিয়েছে। না হলে উপায় নেই। কারণ বাড়িতে তাঁর বাবা একমাত্র রোজগার করেন। তিনিও দিনমজুর। দিন গেলে সাকুল্যে দু’শো টাকার বেশি আয় হয় না। সংসারে বাবা-মা ছাড়া তাঁরা তিন ভাই, দু’বোন। বড় বোনের বিয়ে হয়েছে। বর্তমানে ছ’জন সদস্যর সংসারে অনটন থেকে মুক্তি পেতে পল্টু রাজমিস্ত্রির সঙ্গে দিনমজুরের কাজ নেয়।

সকাল ন’টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত কাজ করতে হয়। দিন গেলে মজুরি দু’শো টাকা। তার পর বাড়ি ফিরে খেয়ে প্রায় শেষ রাত পর্যন্ত পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া। এ ভাবে দু’বছর খেটেই আজ সে সফল হল। পল্টুর প্রাপ্ত নম্বর বাংলায় ৮১, ইংরেজিতে ৭৬, ভূগোলে ৮০, সংস্কৃতে ৭৩ এবং দর্শনে ৯০।

Advertisement

পল্টুর ইচ্ছে ভূগোল নিয়ে পড়ে সে শিক্ষক হবে। জলপাইগুড়ির আনন্দচন্দ্র কলেজে তার পড়ার ইচ্ছে। কিন্তু রাজমিস্ত্রির জোগানদারের কাজ না করলে তাদের সংসার চলবে না। পল্টুর বাবা মানিক বর্মনও বলেন, “আর পড়ানো আমার পক্ষে সম্ভব না। যদি কেউ সাহায্য করে তা হলে ও পড়তে পারে।” এ সব দেখে শুনে হতাশ পল্টুর মন্তব্য, “যদি কলেজে ভর্তি হতে না পারি তা হলে এখন থেকেই একটা চাকরির চেষ্টা করতে হবে। পাশাপাশি দিনমজুরের কাজও চালিয়ে যাব।”

দেওয়ানগঞ্জ হাইস্কুলের প্রধানশিক্ষক কমলেন্দু প্রামাণিক বলেন, “পল্টু অসম্ভবকে সম্ভব করেছে। এখন ও যাতে আরও পড়াশোনা করতে পারে তা
আমরা দেখব।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement