মনোরম: দার্জিলিং-মানেভঞ্জন ল্যান্ডরোভার র্যালি। নিজস্ব চিত্র
এখনও অনেকটাই ফাঁকা। কিন্তু আস্তে আস্তে সেই ফাঁক ভরাট হচ্ছে। দার্জিলিঙে হোটেলের দরজা খুলছে, ক্যাভেন্টার্স, গ্লেনারিজে ভিড় বাড়ছে, ম্যাল বা চিড়িয়াখানার রাস্তায় নানা ভাষায় কথা শোনা যাচ্ছে। অবশ্যই তা অন্য বারের বড়দিনের মতো নয়। কিন্তু মনে করা হচ্ছে, বর্ষশেষে আর একটু ভিড় হবে। সপ্তাহান্তে আরও পর্যটক আসবেন। তাতে দার্জিলিং আস্তে আস্তে আবার ছন্দে ফিরবে বলে আশা পাহাড়ের।
পর্যটনকে আগের জায়গায় ফেরানোর লক্ষে তিস্তা রঙ্গিত পর্যটন উৎসব শুরু হয়েছে বুধবার থেকেই। পর্যটকদের পাহাড়ে আসতে জিটিএ কর্তৃপক্ষ আহ্বান জানিয়েছে। পাহাড়ের পর্যটনকে আগের জায়গায় ফেরাতে রাজ্য এবং জিটিএ একযোগে কাজ করবে বলে বার্তা দিয়েছেন স্বারাষ্ট্র সচিবও। পরিস্থিতি কবে আগের মতো হবে সেই আশায় তাকিয়ে সকলেই।
গত ডিসেম্বরে বড়দিনের দুদিনের উৎসবে পাহাড়ে পর্যটকদের ঢল নেমেছিল। ছয়, সাতটি করে টয় ট্রেনের জয় রাইড হয়। এখন সেই জায়গায় তিনটি জয় রাইড হচ্ছে। তবে বৃহস্পতিবার যাত্রী একটু বেড়েছে বলে ডিএইচআর-এর তরফে জানানো হয়।
গ্লেনারিজ, ক্যাভেন্টার্সের মতো নামকরা রেস্টুরেন্টগুলোতে বড়দিন থেকে বর্ষবরণ পর্যন্ত বিদেশিদের আনাগোনা লেগেই থাকে। এখন কখনও কয়েকজন বিদেশিকে সেখানে দেখা যাচ্ছে।
ব্যবসায়ীরাও জানান, বিদেশি পর্যটক পাহাড়ে কম রয়েছে। ২৫ ডিসেম্বর কারবার কিছুটা জমলেও পোশাকের দোকানগুলোতেও এখন কেনা কাটা সামান্যই হচ্ছে বলে এদিন জানান দীপক চৌবে, সত্যনারায়ণ অগ্রবালের মতো ব্যবসায়ীরা।
ম্যালে পর্যটকদের ঘোড়ায় চড়ানোর ব্যবসায় যুক্ত ১২-১৩ জন। বন্ধে তাঁদের পিঠ দেওয়ালে কোনঠাসা হয়ে গিয়েছিল। এখন তা কাটিয়ে প্রতিদিন গড়ে কেউ ৫০০ কেউ ৭০০ টাকা রোজগার করছে। পর্যটকের ভিড় বাড়লে তাদের রোজগারও বেড়ে দুই হাজারের বেশি হয়। তবে পরিস্থিতি অল্পে অল্পে ঠিক হচ্ছে দেখে খুশি বলে জানান তাসি ভুটিয়া, সন্দীপ থাপারা। বুধবার ম্যালে অনুষ্ঠানের জন্য ঘোড়ায় চড়া বন্ধ রাখা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার অবশ্য তাঁরা পর্যটকদের নিয়ে ঘুরিয়েছেন।
ম্যাল লাগোয়া আস্তাবলের কাছে হোটেল রয়েছে দার্জিলিং হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিজয় খন্নার। তাঁর হোটেলে ২২টি ঘর। বন্ধ উঠে গেলেও তিনি হোটেল কার্যত সুষ্ঠুভাবে চালু করতে পারেননি বলে জানান। তাঁর কথায়, ‘‘পর্যটকদের অর্ধেক টাকায় রাখতে হচ্ছে। সব স্টাফকে এনে হোটেল চালু করলে লোকসান হবে। তাই দুই এক জন স্টাফ এখন রয়েছে। পর্যটকদের সংখ্যাও খুবই কম। কেউ এলে হোটেলের দুই একটি ঘর খুলে দেওয়া হচ্ছে।’’ অার একটি হোটেলের মালিক সমীর সিঙ্ঘল জানান, ম্যাল ঘেঁষা তাঁর হোটেলে আগের চেয়ে অনেক কম হলেও পর্যটক আসছে। তাঁর মতে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ব্যবসা হচ্ছে। পাহাড়ে নিয়মিত যাতায়াতকারী এক ট্যাক্সি চালক অনিল বিশ্বকর্মা বলেন, ‘‘এদিন ফেরার সময় দার্জিলিং থেকে চার জন প্যাসেঞ্জারকে কম টাকা আনতে হয়েছে। গাড়ি অর্ধেক খালি আনার চেয়ে যা হয় সেটাই লাভ।’’