আগুনের আঁচই ভরসা।নিজস্ব চিত্র
শিলিগুড়ি ও দার্জিলিং: কনকনে হাওয়ায় দার্জিলিং পাহাড় এখন জবুথবু। দার্জিলিং শহরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কিছুতেই ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়াচ্ছে না। আর জেলার সব থেকে উঁচু জায়গা সান্দাকফুতে তো রাতে তাপমাত্রা নামছে শূন্যের নীচে। এখন একটাই প্রশ্ন উড়ে বেড়াচ্ছে পাহাড়ে— বরফ পড়বে কবে?
প্রশ্নকর্তাদের অবশ্য দোষ নেই। রোদ ওঠা সকালেও দার্জিলিঙে প্রবল শীত। সঙ্গে হাড় হিম করা হাওয়া, যার গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ৫ কিলোমিটার। তাতে শীতভাব আরও বেড়েছে। আর সান্দাকফুতে রাতে ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার বেগে বয়ে চলা হিম হাওয়ায় পরিস্থিতি আরও জমে গিয়েছে। সিঙ্গলিলা ল্যান্ডরোভার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক চন্দন প্রধান বলেন, ‘‘এখন যা অবস্থা, তাতে তুষারপাত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।’’
আর এই সম্ভাবনায় বাড়ছে পর্যটকদের আগ্রহ। চন্দনবাবু বললেন, ‘‘অনেকেই খোঁজ নিতে শুরু করেছেন।’’ সান্দাকফুতে রয়েছেন জনা তিরিশ পর্যটক। দার্জিলিঙে যে হাতে গোনা পর্যটক এখন রয়েছেন, তাঁরাও ল্যান্ডরোভারের খোঁজ শুরু করেছেন। সান্দাকফুতে ফি বছরই বরফ পড়ে। এ বারও দু’দফায় তুষারপাত হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় প্রায় ৩ ইঞ্চি পুরু বরফে ঢেকে গিয়েছিল সান্দাকফু ও লাগোয়া এলাকা। গত বছর জানুয়ারির শেষে টাইগার হিলে হালকা বরফ পড়েছিল। কিন্তু দার্জিলিং শহরে ২০০৮ সালের জানুয়ারি মাসের পরে এমন ঠান্ডা পড়েনি। সে যাত্রায় শহরের তুলনামূলক উঁচু জায়গাগুলিতে তুষারপাত হয়েছিল। সেই স্মৃতিরই আঁচ পোহাচ্ছেন এখন দার্জিলিঙের পুরনো বাসিন্দা প্রশান্ত লামা, মণিকা প্রধানরা। ম্যালের চা বিক্রেতা গগন তামাঙ্গ কিংবা ফেরিওয়ালা নীলু শেরপারা কাঠকুটো জ্বেলে আগুন পোহাচ্ছিলেন। তাঁরাও কিন্তু তুষারপাতের অপেক্ষায়। কারণ, তাঁদের সরল বিশ্বাস— ‘‘বরফ পড়লে পর্যটক বাড়ে।’’
ইস্টার্ন হিমালয় ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরী সভাপতি সম্রাট সান্যালও। তিনি বলেন, ‘‘দার্জিলিঙের ব্যাপারই আলাদা। হাতের কাছে দার্জিলিঙে বরফ পড়লে সকলেই তা দেখতে চান।’’ যদি বরফ পড়ে এই পর্যটকহীন মরসুমে অকাল বসন্ত আসবে পাহাড়ের বাণিজ্যে।