গত জানুয়ারি মাসে ডালখোলার বাইপাস কাজ শুরু হয়েছে। কবে শেষ হবে তার নিশ্চয়তা নেই। কিন্ত তার আগে বাইপাস কাজ শুরু করার কৃতিত্ব কার, তা নিয়ে পুরভোটকে সামনে রেখে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
২০০৬ সালে ডালখোলা বাইপাস করার জন্য তৎকালীন কেন্দ্রীয় পরিবহণ মন্ত্রী টি আর বালু এবং তৎকালীন কেন্দ্রীয় মন্ত্ৰী প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সি এই প্রকল্পের শিল্যানাস করেছিলেন। মাঝে কেটে গিয়েছে ১২টি বছর।
ডালখোলা শহরের মধ্যে দিয়ে চলে গিয়েছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক। শহরের মাঝখান দিয়ে রয়েছে রেল লাইন। উত্তর পূর্ব ভারতের সঙ্গে দেশের অন্য অংশের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম এই রেলপথ। প্রতিদিন প্রচুর ট্রেন যাতায়াত করে এই রেলপথ দিয়ে। তাই প্রায়ই বন্ধ থাকে ব্যস্ততম শহরের রেলগেটটি। জাতীয় সড়কের উপর তাই নিত্য যানজট লেগেই থাকে। সমস্যা সমাধানের জন্য ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি ডালখোলা বাইপাস নির্মাণের জন্য অর্থ মঞ্জুর করে। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে কাজ শুরু হয়।
কিন্ত কৃতিত্ব কার?
এই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক টানাপোড়েন। দুয়ারে পুরভোট। সেই ভোটকে ঘিরে বাইপাস নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। জেলা সিপিএম সম্পাদক অপূর্ব পাল বলেন, ‘‘রায়গঞ্জ সাংসদ মহম্মদ সেলিমের চেষ্টা ও তদ্বিরের জন্যই এই সমস্যার সমাধানের মীমাংসা সূত্র বেরিয়েছে। এমনকি অতিরিক্ত টাকা বরাদ্দ হয়েছে। সাংসদ কেন্দ্রীয় পরিবহণমন্ত্রী নীতিন গডকড়ির সঙ্গে দেখা এই কাজ আদায় করেন।’’ তাঁর দাবি, ‘‘শাসকদলের সিন্ডিকেট চক্র বার বার ঠিকাদার সংস্থার কাছে তোলা দাবি করেছে। সিন্ডিকেটের রাজ চক্রের মদতে কাজ বন্ধ ছিল। সংস্থা কাজ ছেড়ে চলে যায়। ফের নতুন করে টেন্ডার করে কাজ শুরু হয়। আমরা ভোটের ইস্যু করব।’’
অন্যদিকে ডালখোলা পুরসভার পুরপ্রধান তৃণমুলের সুভাষ গোস্বামী বলেন, ‘‘সিপিএম-এর লজ্জা হওয়া উচিত। কী করে তারা দাবি করে বাইপাসের কাজ তাদের কৃতিত্ব? ৩৪ বছরের শাসনকালে বাইপাস করতে পারেনি। উল্টো বাধা দিয়েছে কাজে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ডালখোলার পুরপ্রধান হিসেবে ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এই কাজ সম্ভব হয়। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যেগে এই কাজ সম্ভব হয়। জমি জটের প্রতিটা মামলা সমাধান করে কাজ করা হয়। সুষ্ঠু ভাবে কাজ চলছে।’’ তাঁরাও ভোটে সে কথা তুলবেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বাইপাসটি ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে ডালখোলা ফ্লাওয়ার মিল থেকে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে পূর্ণিয়া মোড় গিয়ে উঠবে। প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এই বাইপাসের কাজের জন্য চার বছর আগে বরাদ্দ হয়েছিল ৮৬ কোটি ৫২ লাখ টাকা। কিন্ত তারপরেও কাজ শুরু না হওয়ায় প্রকল্পের খরচ অনেকটাই বেড়ে গিয়েছিল। পরবর্তীতে এই প্রকল্পের জন্য ১৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। কাজ চলছে।