আদালত ভবনে ফাটল কম্পনে, কর্মবিরতি

ভূমিকম্পে আদালত ভবনে ফাটলের জেরে কর্মবিরতি শুরু করেছেন দার্জিলিঙের আইনজীবীরা। গত ২৫ এপ্রিলের ভূমিকম্পের পরেই দার্জিলিং জেলা আদালতের বিভিন্ন ঘরের দেওয়ালে ফাটল দেখা যায়। আইনজীবীদের দাবি, গত মঙ্গলবারের ভূমিকম্পের পরে সেই ফাটল বেড়েছে। ফের ভূমিকম্প হলে, গোটা বাড়িটাই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়তে পারে এই আশঙ্কায় বুধবার থেকে কর্মবিরতি শুরু করেছে দার্জিলিং বার অ্যাসোসিয়েশন।

Advertisement

রেজা প্রধান

দার্জিলিং শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৫ ০২:৩২
Share:

দার্জিলিং আদালতে কর্মবিরতি আইনজীবীদের। ছবি: রবিন রাই।

ভূমিকম্পে আদালত ভবনে ফাটলের জেরে কর্মবিরতি শুরু করেছেন দার্জিলিঙের আইনজীবীরা। গত ২৫ এপ্রিলের ভূমিকম্পের পরেই দার্জিলিং জেলা আদালতের বিভিন্ন ঘরের দেওয়ালে ফাটল দেখা যায়। আইনজীবীদের দাবি, গত মঙ্গলবারের ভূমিকম্পের পরে সেই ফাটল বেড়েছে। ফের ভূমিকম্প হলে, গোটা বাড়িটাই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়তে পারে এই আশঙ্কায় বুধবার থেকে কর্মবিরতি শুরু করেছে দার্জিলিং বার অ্যাসোসিয়েশন। আগামী শনিবার পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে বলে জানানো হয়েছে। এই কর্মবিরতির জেরে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে বিচারপ্রার্থীদের মধ্যে।

Advertisement

পূর্ত দফতরের আধিকারিকেরা আগামী শনিবারের মধ্যে ভবন পরিদর্শন করে রিপোর্ট না দিলে, কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়া হতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছে বার অ্যসোসিয়েশন। এর আগে গত ২৫ জুলাইয়ের ভূমিকম্পের পরেও সপ্তাহখানেক কর্মবিরতি করেছিল বার অ্যাসিয়েশন। দু’দফায় আইনজীবীদের কর্মবিরতিতে দুর্ভোগে পড়েছেন বিচারপ্রার্থীরা।

জেলা আদালতের রেকর্ড রুম এবং বার অ্যাসোসিয়েশনের ঘরে ফাটল ধরেছে। এ ছাড়াও ভবনের কয়েকটি স্তম্ভে চুলের মতো সরু কয়েকটি ফাটল দেখা গিয়েছে বলে আইনজীবীরা জানিয়েছেন। দোতলা ভবনের বিভিন্ন দেওয়ালে ফাটল দেখা যাওয়ায় আইনজীবীরা আতঙ্কে ভুগছেন। পাহাড়ি এলাকায় কোনও ভবনে ফাটল থাকা বিপজ্জনক বলে দাবি করেছে বার অ্যাসোসিয়েশন। তাদের আশঙ্কা, ফের ভূমিকম্প হলে দেওয়াল ধসে পড়তে পারে। সে কারণেই জেলা জজকে চিঠি লিখে কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানানো হয়েছে। অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শেষমনি গুরুঙ্গ বলেন, ‘‘গত মাসের শেষে ভূমিকম্পের পরে পূর্ত দফতরকে পরিদর্শনের দাবি জানিয়েছিলাম। সে সময়েও আমরা কর্মবিরতি চালিয়েছি। কিন্তু কোনও পরিদর্শন হয়নি। যে ভাবে বারবার ভূমিকম্প হচ্ছে, তাতে আতঙ্কে রয়েছি। ভবন জুড়ে ফাটল দেখা যাওয়ায় বিপদের আশঙ্কা রয়েছে।’’

Advertisement

বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সংখ্যা দেড়শো। কর্মবিরতি চলাকালীন সরকার পক্ষের আইনজীবীরাও শুনানিতে অংশ নেবেন না বলে জানিয়েছেন। তার ফলে কর্মবিরতি চলাকালীন কোনও মামলারই শুনানি হওয়ার সম্ভবনা নেই। হঠাৎ করে কর্মবিরতি শুরু হওয়ায় এ দিন অনেক বিচারপ্রার্থীদের আদালতে এসে ফিরে যেতে হয়েছে। এ দিন আদালতে এসেও, ফিরেতে হওয়ায় দার্জিলিঙের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘কমবেশি সব বাড়িতেই ক্ষতি হয়েছে। তাই বলে কি সকলে রাস্তায় বসে রয়েছে? ইচ্ছে মতো কর্মবিরতি শুরু হয়ে গেল, আর আমরা যাঁরা মামলার নিষ্পত্তির জন্য বছরের পর বছর অপেক্ষায় রয়েছি, তারা আরও পিছিয়ে পড়লাম।’’

আগামী সোমবার ফের বৈঠকে বসবে বার অ্যাসোসিয়েশন। সেই বৈঠকেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত হবে বলে জানানো হয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, ভূমিকম্পের পরে দার্জিলিং পাহাড়ের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে। তার মধ্যে যেগুলির পরিস্থিতি সবচেয়ে বিপজ্জনক, সেগুলিতে পরিদর্শন শুরু হয়েছে। জেলা আদালত ভবনেও পরিদর্শন হবে বলে জানানো হয়েছে। দার্জিলিঙের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘কোথায় কোথায় ক্ষতি হয়েছে, তা জানতে সমীক্ষা শুরু হয়েছে। জেলা আদালতেও পরিদর্শন হবে। পূর্ত দফতরের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement