কংগ্রেসের পরে এ বার রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে সিপিএমও দলীয় প্রার্থী দেওয়ার কথা ঘোষণা করল। এর ফলে এই দুই কেন্দ্রে দুই দলের আসন সমঝোতার সম্ভাবনা নিয়ে ঘোর অনিশ্চয়তা তৈরি হল।
শনিবার রায়গঞ্জে সিপিএমের উত্তর দিনাজপুর জেলা কার্যালয়ে বামফ্রন্টের বৈঠক ছিল। বৈঠকের পর রাজ্য বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু সাংবাদিকদের জানান, রাজ্যে বিজেপি ও তৃণমূলকে রোখার স্বার্থে কংগ্রেসের সঙ্গে বামেদের কোনও বিরোধ নেই। গত বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে তৃণমূলকে রুখতে কংগ্রেসের সঙ্গে সিপিএম আসন সমঝোতা করেছিল। গত লোকসভা নির্বাচনে রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ কেন্দ্র সিপিএম দখল করেছিল। তাই আসন সমঝোতার শর্ত অনুযায়ী লোকসভা নির্বাচনে ওই দুই আসনে সিপিএমের জয়ী প্রার্থীরাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এ দিন শিলিগুড়ি থেকে একই সুর শোনা গিয়েছে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের মুখেও। এ দিন হিলকার্ট রোডে দলীয় কার্যালয়ে তিনি বলেন, ‘‘আসন সমঝোতা নিয়ে আমরা আমাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছি। বিজেপি এবং তৃণমূলকে ঠেকাতে এ বার কংগ্রেসকে পদক্ষেপ করতে হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও জোট বা মোর্চা হবে না। কিন্তু একটা সমঝোতার কথা আমরা বলছি।’’ ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই দুই কেন্দ্রে সিপিএমের দুই প্রার্থী মহম্মদ সেলিম ও বদরুদ্দজা খান জয়ী হন। বিমানের ঘষণা অনুযায়ী, দুই কেন্দ্রে এবার এঁরাই প্রার্থী হচ্ছেন।
সিপিএম সমঝোতার কথা বললেও শুক্রবার রায়গঞ্জের নেতাজিপল্লি এলাকায় দলের জেলা কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে লোকসভা নির্বাচনে রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদে দলীয় প্রার্থী দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত। তিনি দাবি করেন, তৃণমূল ও বিজেপিকে রুখতে এ রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে বামেদের জোটের সম্ভাবনা থাকলেও এই দুই আসনে কংগ্রেস প্রার্থী দেবে বলে প্রদেশ কংগ্রেস সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রায়গঞ্জে দীপা দাশমুন্সিকে দলের প্রার্থী করা হবে। মুর্শিদাবাদে দলের কে প্রার্থী হবেন, তা পরে ঘোষণা করা হবে। এ ব্যাপারে এক প্রশ্নের জবাবে বিমান এ দিন জানান, কংগ্রেস প্রার্থী দিতেই পারে। কিন্তু কংগ্রেসকে এটা মনে রাখতে হবে, ওই দুই আসনে কংগ্রেস ও সিপিএম— দু’পক্ষেরই প্রার্থী দাঁড়ালে শাসক দল ও বিজেপিরই সুবিধা হয়ে যাবে।
এ দিন মোহিত দাবি করেন, বিমান ও সেলিম কী বলছেন, তা নিয়ে কংগ্রেসের কোনও মাথাব্যথা নেই। রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদে কংগ্রেস শক্তিশালী। তাই সিপিএম ওই দুই আসন কংগ্রেসকে না ছাড়লে প্রদেশ কংগ্রেস রাজ্যের কোথাও সিপিএম ও বামেদের সঙ্গে আসন সমঝোতা করবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিমানের পাল্টা দাবি, লোকসভা নির্বাচনে সিপিএম রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ-সহ আপাতত ২২টি আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাকি আসনগুলি কংগ্রেস ও বামফ্রন্টের শরিক দলের প্রার্থীদের ছেড়ে
দেওয়া হবে।