দোষীদের শাস্তি চেয়ে থানা ঘেরাও সিপিএমের

ছাত্রীকে গণধর্ষণ ও খুনের অভিযোগের ন’দিন পরেও মূল অভিযুক্তরা গ্রেফতার না-হওয়ায় পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে ধূপগুড়িতে। এলাকার বাসিন্দাদের অনেকেই দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন। নিহত ছাত্রীর পরিবারের লোকজন যাতে রাতে নির্ভয়ে বাড়িতে থাকতে পারেন, সে জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার দাবিও তুলেছেন বাসিন্দাদের অনেকেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ধূপগুড়ি শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:৪৮
Share:

প্রায় এক ঘণ্টা ধূপগুড়ি থানা ঘেরাও করে রাখেন সিপিএম সমর্থকেরা।—নিজস্ব চিত্র।

ছাত্রীকে গণধর্ষণ ও খুনের অভিযোগের ন’দিন পরেও মূল অভিযুক্তরা গ্রেফতার না-হওয়ায় পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে ধূপগুড়িতে। এলাকার বাসিন্দাদের অনেকেই দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন। নিহত ছাত্রীর পরিবারের লোকজন যাতে রাতে নির্ভয়ে বাড়িতে থাকতে পারেন, সে জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার দাবিও তুলেছেন বাসিন্দাদের অনেকেই। প্রতিবেশীদের ভরসা পেয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাড়িতে থাকছেন নিহত ছাত্রীর বাবা-মা ও অন্যরা। কিন্তু, রাত নামলেই প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরের ওই ছাত্রীর মামাবাড়িতে চলে যাচ্ছে পরিবারটি।

Advertisement

এই অবস্থায়, বুধবার সিপিএমের পক্ষ থেকে অভিযুক্তদের ধরার দাবিতে মিছিল করে থানায় গিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়। প্রায় এক ঘণ্টা থানা ঘেরাও করে রাখেন বিক্ষোভকারীরা। পরে স্মারকলিপি দিয়ে জেলা সিপিএম নেতৃত্ব থানার আইসিকে জানিয়ে দেন, দ্রুত অভিযুক্তরা গ্রেফতার না হলে লাগাতার থানা ঘেরাও করা হবে। সিপিএমের ধূপগুড়ি জোনাল কমিটির সম্পাদক তুষার বসুর অভিযোগ, “অপরাধীরা ঘুরে বেড়াচ্ছে। এলাকা জুড়ে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। নিহত ছাত্রীর বাবা-মা ভয়ে বাড়িতে থাকতে পারছেন না। অথচ পুলিশ অপরাধীদের খুঁজে পাচ্ছে না। দায়সারা ভাবে তদন্ত করে পুলিশ ঘটনাকে চাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে।” যদিও পুলিশ কর্তারা সিপিএম নেতৃত্বের তোলা গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করেন। রেল পুলিশ সুপার দেবাশিস সরকার বলেন, “গাফিলতির কিছু নেই। ঘটনার তদন্ত চলছে। ইতিমধ্যে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে প্রতিদিন তল্লাশি চলছে।”

ধূপগুড়ি কাণ্ডের প্রতিবাদ। শিলিগুড়িতে।

Advertisement

এ দিন বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ ডাক বাংলো সংলগ্ন এলাকা থেকে বেড়িয়ে মিছিল শহরের প্রধান রাস্তা পরিক্রমা করে। যানজটে অবরুদ্ধ হয়ে পরে ধূপগুড়ি-ফালাকাটা এবং ধূপগুড়ি-জলপাইগুড়ি রোড। প্রাক্তন বনমন্ত্রী বনমালী রায়, জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সভাধিপতি নূরজাহান বেগম, দলের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য বিজয়বন্ধু মজুমদার মিছিলে পা মেলান। বিকেল ৫টা নাগাদ মিছিল থানায় পৌঁছতে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। দলের নেতা কর্মীরা পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। এক সময় সিপিএম কর্মীরা থানার ভিতরে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করলে দলীয় নেতৃত্ব কোনও মতে পরিস্থিতি সামাল দেন। এর পরে কর্মীরা থানার গেট অবরোধ করে মাটিতে বসে পড়েন।

এর পরে স্মারকলিপি দিতে গিয়ে জেলা সিপিএম আহ্বায়ক সলিল আচার্য আইসিকে প্রশ্ন করেন, গত ২ সেপ্টেম্বর ছাত্রীর দেহ উদ্ধার হয়েছে। ওই দিন ১৩ জনের নামে অভিযোগ জানানো হয়। কেন ওই অপরাধীদের প্রত্যেককে ঘটনার নয় দিন পরেও ধরা হল না? সলিলবাবু অভিযোগ করেন,“ যাদের আপনারা খুঁজে পাচ্ছেন না তাঁরা তো এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে খবর পাচ্ছি। সত্যি কি আপনারা তদন্ত করছেন? নাকি গোটা ঘটনাকে আড়াল করার চেষ্টা করছেন? পুলিশ অফিসাররা সলিলবাবুদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু, প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে ক্ষোভ প্রকাশের পরে সিপিএম নেতারা থানা ঘেরাও তোলেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement