ভোটের কাজ চলছে একসঙ্গেই। ধূপগুড়িতে। নিজস্ব চিত্র।
ধূপগুড়ি পুর নির্বাচনে সার্বিক বাম ঐক্য না হওয়ায় সিপিএমের উপরে ক্ষুব্ধ বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক ও আরএসপি৷
এই পরিস্থিতির জন্য সরাসরি বড় শরিককে দায়ি করে ফরওয়ার্ড ব্লক নেতৃত্ব রবিবার সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, বাম ঐক্য না হওয়ার জন্য ধূপগুড়িতে যদি তৃণমূল ও বিজেপি সুবিধা পায়, তার জন্য দায়ি থাকবেন সিপিএম নেতারা৷ আসন না পেয়ে সিপিএম নেতাদের উপর আরএসপি নেতৃত্ব ক্ষোভ প্রকাশ করলেও বাম ঐক্যের স্বার্থে তাঁরা নির্বাচনে তারা সিপিএম প্রার্থীদের সমর্থন করবেন বলেই জানিয়েছেন৷
আগামী ১৩ অগস্ট রাজ্যের আরও ছ’টি পুরসভার নির্বাচনের সঙ্গেই ধূপগুড়িতেও পুরনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে৷ যে জন্য দিন কয়েক আগে ধূপগুড়িতে এসে ষোলোটির মধ্যে তেরোটি ওয়ার্ডে দলের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন ফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু৷ পরে বাকিদের নাম ঘোষণা করা হয়।
ফ্রন্ট সূত্রের খবর, গত বার ধূপগুড়ি পুর নির্বাচনে ৩ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী দিয়েছিল ফরওয়ার্ড ব্লক৷ এবারও তারা ওই ওয়ার্ডটি চেয়েছিল৷ কিন্তু দলের নেতাদের অভিযোগ, তাদের সঙ্গে কোন আলোচনা করেই ওই ওয়ার্ডে একতরফা ভাবে প্রার্থী ঘোষণা করে দেয় সিপিএম৷ ঘটনায় বেজায় ক্ষুব্ধ ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য নেতৃত্বও৷
দলের রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় রবিবার বলেন, জলপাইগুড়ি জেলা বাম আন্দোলনের জেলা৷ অথচ, ধূপগুড়িতে বাম ঐক্য গড়ে উঠল না৷ এটা অত্যন্ত দুঃখের ও লজ্জার৷ এ ভাবে তৃণমূল কিংবা বিজেপির মতো সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করা সম্ভব নয়৷
প্রার্থীপদ নিয়ে বড় শরিক সিপিএমের ওপর ক্ষুব্ধ আরএসপিও৷ দলের জেলা সম্পাদক ছায়া রায় বলেন, ‘‘গতবারই সিদ্ধান্ত হয়েছিল এবার ধূপগুড়িতে আমরা প্রার্থী দেব৷ কিন্তু তা হল না৷ ফলে দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে তো ক্ষোভ থাকবেই৷ তবে বাম ঐক্যের স্বার্থেই আমরা সিপিএম প্রার্থীদের সমর্থন করব৷’’
সিপিএমের জেলা সম্পাদক সলিল আচার্য অবশ্য এ দিন দাবি করেন, জেলা বামফ্রন্টের বৈঠকেই ফরোয়ার্ড ব্লক নেতারা জানিয়েছিলেন, তারা এ বার ধূপগুড়িতে প্রার্থী দিতে পারবেন না৷ সেজন্যই ৩নম্বর ওয়ার্ডে সিপিএম প্রার্থীকে দাঁড় করান হয়৷
এদিকে এ দিন জলপাইগুড়িতে ফরওয়ার্ড ব্লক রাজ্য সম্পাদক জানান, ছেড়ে যাওয়া কর্মীদের ফিরিয়ে এনে দল পুনর্গঠন করবে ফরওয়ার্ড ব্লক৷ তিনি জানান, পালা বদলের পর অনেক ফরোয়ার্ড ব্লক নেতারা কর্মীদের নিয়ে দল বদল করেছেন৷ কিন্তু দল বদল করা ওই কর্মীদের একটা বড় অংশ আবার পরওয়ার্ডব্লকে ফিরতে চাইছে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা ওই কর্মীদের দলে ফিরিয়ে নেব৷ তবে নেতাদের নেওয়া হবে না৷’’
উত্তরবঙ্গের সার্বিক উন্নয়নের দাবিতে আগামী ১২ সেপ্টেম্বর উত্তরকন্যা ঘেরাও করা হবে বলে জানান নরেনবাবু৷
তিনি বলেন, ‘‘ওই দিন উত্তরবঙ্গে সব জেলা থেকে দলীয় কর্মীরা সেখানকার নানা সমস্যা কথা তুলে ধরে উত্তরকন্যায় আসবেন৷’’ পাহাড় পরিস্থিতির জন্য এদিনও রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেন ফরোয়ার্ডব্লক রাজ্য সম্পাদক৷